রাকসুতেও শিবিরের অভাবনীয় জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১১:৩৩ অপরাহ্ন

জালালাবাদ রিপোর্ট : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভিপি ও এজিএসসহ ২৩টি পদের ২০টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। তবে জিএস, ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে তারা হেরেছে।
সাড়ে তিন দশক পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ৭২ বছরে এটি রাকসুর ১৭তম নির্বাচন। ১৯৯০ সালের পর দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। সেখানে অধিকাংশ পদে জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। রাকসুতেও এর ধারাবাহিকতা দেখা গেল।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে ভিপি পদে শিবিরের মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭টি। একই পদে নিকটতম ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন (আবির) ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭টি।
এদিকে জিএস পদে সালাউদ্দিন আম্মার বড় ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৯৭টি। তাঁর নিকটতম শিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৭ ভোট। আম্মার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। ফাহিম রেজাও সাবেক সমন্বয়ক।
শীর্ষ তিন পদের তৃতীয় পদ এজিএসে (সহসাধারণ সম্পাদক) প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী এস এম সালমান সাব্বির নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭৫টি। তাঁর নিকটতম ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের জাহিন বিশ্বাস (এষা) পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৫১ ভোট।
বেসরকারিভাবে আলাদাভাবে হলগুলোর ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনার ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা শুক্রবার সকালে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের মঞ্চে বসেন। সকাল নয়টায় আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম। এর আগে তিনি উদ্বোধনী বক্তব্য বলেন, কঠোর ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের কারণে এ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়েছে। আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না, প্রশাসন কীভাবে নির্বাচনের বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। উপাচার্য মহোদয় বলেছিলেন, নির্বাচন হতেই হবে, হতেই হবে। এ নির্বাচনের যদি কোনো স্বার্থকতা থেকে থাকে, সেটা একান্তই আমাদের শিক্ষার্থীদের। ৩৫ বছর বহুল প্রতীক্ষিত এ নির্বাচন ও ফলাফলকে আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের উৎসর্গ করলাম।
শিবির প্যানেল যেসব পদে নির্বাচিত :
ভিপি-এজিএস ছাড়াও সহকারী ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে আবু সাঈদ মুহাম্মাদ নুন (সামি), সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে জায়িদ হাসান জোহা, সহকারী সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সাইয়িদা হাফছা, সহকারী মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সামিয়া জাহান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে বি এম নাজমুছ সাকিব, সহকারী তথ্য ও গবেষণা পদে সিফাত আবু সালেহ, মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মো. মুজাহিদুল ইসলাম, সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আসাদুল্লাহ গালিব, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে মুজাহিদুল ইসলাম সাঈম, বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক পদে ইমরান লস্কর, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক পদে মো. নয়ন হোসেন, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক পদে মাসুমা ইসরাত। এ ছাড়া নির্বাহী সদস্যপদের চারটিতেই তারা জয়ী হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. দীপ মাহবুব, সুজন চন্দ্র, মো. ইমজিয়াউল হক কামালি ও এ বি এম খালেদ।







