ট্রাম্পের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ৬:৪৯:১৩ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার কিছু মুহূর্ত আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দেন-তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম আবারও শুরু করতে যাচ্ছেন। এই ঘোষণা আসে বৃহস্পতিবার, যখন ট্রাম্প ‘মেরিন ওয়ান’ হেলিকপ্টারে করে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ পোস্ট দিয়ে তিনি জানান, ‘অন্যান্য দেশের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের কারণে আমি প্রতিরক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন যুক্তরাষ্ট্রও সমানভাবে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে। এই প্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে।’
তিনি আরও দাবি করেন, রাশিয়া এখন দ্বিতীয় এবং চীন অনেক পিছিয়ে, তবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে।তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, তার ঘোষণাটি পরমাণু বিস্ফোরণভিত্তিক পরীক্ষার জন্য, নাকি পরমাণু-সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের ফ্লাইট টেস্টের জন্য।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। নেভাডার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ডিনা টিটাস বলেন, তিনি এই উদ্যোগ বন্ধ করতে কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব আনবেন।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পরিচালক ড্যারিল কিমবল বলেন, ‘ট্রাম্প ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরমাণু বিস্ফোরণের কোনো প্রযুক্তিগত, সামরিক বা রাজনৈতিক প্রয়োজন নেই।’
তিনি সতর্ক করেন, এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ দেশগুলোকেও নতুন করে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে উৎসাহিত করতে পারে। এতে করে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৫,২২৫টি এবং রাশিয়ার কাছে ৫,৫৮০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে বলে জানিয়েছে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।চীন গত পাঁচ বছরে তার পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা দ্বিগুণ করে ৬০০-তে পৌঁছেছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ১,০০০ ছাড়িয়ে যাবে।ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া যদি পরীক্ষা চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও থেমে থাকবে না। এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ঘোষণা দেন, তারা সফলভাবে পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডো ও ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও শক্ত করতে হলে এ ধরনের পরীক্ষা জরুরি। তবে সমালোচকরা বলছেন, এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। যুক্তরাষ্ট্র শেষবার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করেছিল ১৯৯২ সালে। এরপর উত্তর কোরিয়া ছাড়া কোনো বড় পরমাণু শক্তিধর দেশ প্রকাশ্যে বিস্ফোরণভিত্তিক পরীক্ষা চালায়নি।







