আলোচনায় ফিরছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ৯:২৭:৪৯ অপরাহ্ন

জালালাবাদ ডেস্ক: সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও উত্তেজনার মধ্যেও আবারও আলোচনায় ফিরতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে নতুন করে বৈঠক শুরু করতে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ। পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইস্তাম্বুলে চার দিনব্যাপী আলোচনার পর সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব না হলেও তুরস্কের আহŸানে ফের আলোচনায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন দফার বৈঠক বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। খবর আল জাজিরার।
একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান আবারও জোর দিয়েছে, আফগান ভূমি যেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে ব্যবহার না হয়। আমরা তুরস্কের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করি এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আফগান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তুরস্ক ও কাতারের হস্তক্ষেপে দুই দেশই আলোচনায় ফেরার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এর আগে আলোচনার আগের পর্বে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ মাসের শুরুতে দুই দেশের সীমান্তে টানা কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ১৯ অক্টোবর দোহায় দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
তবে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে পাকিস্তান আফগানিস্তানের কাছে তাদের প্রধান দাবি জানায়—তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে টিটিপি আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালাচ্ছে।
২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ার অন টেরর’-এর সময় টিটিপির উত্থান ঘটে। সংগঠনটি তখন থেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামাবাদ আরও অভিযোগ করে, কাবুল টিটিপি ছাড়াও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ও ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি)-এর সদস্যদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে আফগান তালেবান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, টিটিপি ইস্যু পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আইএসকেপি তাদের শত্রু ।
আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আফগান তালেবান সরকার নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অঞ্চলকে নতুন সংঘাতে ঠেলে দিচ্ছে। তারা আমাদের ধৈর্য ও সাহসকে ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছে। এ বিষয়ে আফগান তালেবান এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
সুইডেনভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুল সাইয়্যেদ বলেন, আসিফের বক্তব্য পাকিস্তানের সম্ভাব্য বিমান হামলার ইঙ্গিত দিলেও আলোচনায় ফেরার সিদ্ধান্ত নমনীয়তার লক্ষণ।
সাইয়্যেদ বলেন, আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়া মানে হয় আগের অচলাবস্থার বিষয়টি মীমাংসিত হয়েছে, নয়তো পাকিস্তান মধ্যস্থতাকারীদের আহবানে তাদের অবস্থানে কিছুটা নমনীয়তা দেখিয়েছে। আসিফ আরও দাবি করেন, ভারত আফগান তালেবানের মাধ্যমে পাকিস্তানে ‘নি¤œমাত্রার যুদ্ধ’ চালাচ্ছে। যদিও তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
এ বছরের মে মাসে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তেও চারদিনের সংঘর্ষ হয়। দুই দেশই একে অপরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে।






