সংবাদ সম্লেলনে প্রধানমন্ত্রী : ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৪, ১০:০৩:২৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর সম্পর্কে বলেছেন, এ সফর ছিল সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফলপ্রসু। আমি মনে করি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে এ সফর সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গণভবনে সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনের প্রথমেই বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল চলাচলের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন আসে। দেশকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা প্রসঙ্গও ছিল প্রশ্নটিতে। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটা প্রশ্ন আছে, ওজনটা কিসে মাপছে? ওজন মাপা হচ্ছে কীভাবে? আগে তো পাল্লায় হতো, এখন মেশিনে মাপা হয়। এখন তাহলে কীভাবে বিক্রি হবে? স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেই আমরা দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো করেছি। আমরা দেশ বিক্রির জন্য কোনো চুক্তি করিনি। শেখ হাসিনা দেশ বিক্রির জন্য কোনো চুক্তি করে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশ আমরা স্বাধীন করেছি। যারা সমালোচনা করে, তাদের জানা উচিত, একটিমাত্র মিত্রশক্তি আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ স্বাধীনে সহযোগিতা করেছে। পৃথিবীতে যারা মিত্রশক্তি, যারা যুদ্ধে সহযোগিতা করে, তারা কিন্তু ওই দেশ ছেড়ে যায়নি। এখনো জাপানে আমেরিকান সৈন্য, জার্মানিতে রাশিয়ান সৈন্য আছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এখানে ভারত কিন্তু ব্যতিক্রম। তারা মিত্রশক্তি হিসেবে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করে এসেছে। কিন্তুবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখনই চেয়েছেন, তারা (ভারতের সৈন্য) দেশে ফেরত যাক-ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়েছেন এবং তাদের ফেরত নিয়ে গেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপরও যারা কথা বলে, ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে, তারা এ কথা বলে কীভাবে? আসলে যারা এ কথা বলে, তারা নিজেরাই ভারতের কাছে বিক্রি হওয়া। কারণ আমরা দেখেছি, যখনই মিলিটারি ডিক্টেটররা (সামরিক স্বৈরাচার) এসেছে, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ওপর দিয়ে ভারতবিরোধী কথা বলেছে, আর ভারতের পা ধরে বসে থেকেছে। এগুলো আমার নিজের দেখা, জানা।’
একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী বলে প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রেল যেগুলো বন্ধ ছিল (ভারতের সঙ্গে), সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে কি চারদিকে দরজা বন্ধ করে থাকব? ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডার নেই। সেখানে কি এক দেশ আরেক দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে?
তিস্তা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিস্তার পানি বণ্টন নয়, মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু ও আঞ্চলিক অংশীদার ভারত। দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে আরও গভীরভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে কমিশন গঠনসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু মানুষ লোভী হয়ে যায়। টাকাপয়সা এত বেড়ে যায় যে দেশ বাদে বিদেশে রাখতে গিয়ে তারপর দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়। সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো? এতই অর্থ বানিয়ে ফেলল যে দেশেই থাকা যায় না। তাহলে লাভ হলো কী! এটা তো মানুষ চিন্তা করে না। নেশার মতো হয়ে যায়।’
ব্যাংক খাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ ব্যাংক ভালো চালাতে পারছে, কেউ পারছে না। যদি কোনো ব্যাংক দুর্বল হয়, তাকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। যারা আমানত রাখে, তাদের আমানত সংরক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেটাই পালন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে যেটুকু সমস্যা হচ্ছে, তা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।