সরকারের প্রতি আট দলের কঠোর বার্তা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৪১:৫৫ অপরাহ্ন
গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দাবি | দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর চিত্র ভিন্ন হবে: গোলাম পরওয়ার

জালালাবাদ রিপোর্ট : জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ ৫ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামী দল। ১০ নভেম্বরের মধ্যে ঘোষণা না এলে দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচীর হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের পক্ষে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা আটটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ প্রতিনিধিরা আজকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আমরা সরকারকে আন্তরিকভাবে সকল ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি। উত্থাপিত ৫ দফা দাবি আদায়ে তিনি উপদেষ্টা পরিষদকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
হুঁশিয়ারি দিয়ে জামায়াতের অন্যতম শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘দাবি পূরণ না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে। পরওয়ার বলেন, ১১ নভেম্বর রাজধানীর মহাসমাবেশ লক্ষ লক্ষ জনতার পদভারে মুখরিত হওয়ার আগে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাদের এই ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাইয়ের গণ-আকাঙ্খার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন।
পাঁচ দফা দাবি হলো-জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এর আগে, দুপুর নাগাদ পুরান পল্টন মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি মৎস্য ভবনের কাছে গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয়। বাধা সত্ত্বেও আট দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাদের দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় প্রবেশ করতে সক্ষম হন। প্রতিনিধি দলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতারা ছিলেন।
তার আগে, মৎস্য ভবন থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত রাস্তার এক পাশে বসে পড়ে দলগুলোর নেতাকর্মীরা। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী শাপলা চত্বরের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন। পরে তারা পুরানা পল্টনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন।
আন্দোলনরত আটটি ইসলামি দল হলো-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)।
সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি যদি ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার অর্জিত মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়ে আপনি যে সম্মান অর্জন করেছেন, তা অক্ষুন্ন রাখতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা জামায়াতের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা দিয়েছি- আমরা প্রস্তুত।







