গ্যাসের দাম পুননির্ধারণ চায় এফবিসিসিআই
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৫৮:৩৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : করোনা মহামারী ও ইউক্রেন সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ দাম বেড়েছে প্রায় সব খাতে। সার্বিক পরিবহন ব্যয় ও মুদ্রা বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা পরিচালনার খরচও অধিক হারে বেড়েছে। ফলে ব্যবসা সচল রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
এ অবস্থায় ভোক্তাদের ওপর চাপ না দিয়ে জ্বালানি খাতের রাজস্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে বর্তমান মূল্য থেকে প্রস্তাবিত ৫৭ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ক্যাপটিভ ও অন্যান্য খাতে গ্যাসের দাম পুনর্র্নিধারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চেয়েছে সংগঠনটি। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জনস্বার্থে গ্যাসের দাম পুননির্ধারণের অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, চাহিদা অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনা হলে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ক্যাপটিভের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ১৬ টাকার জায়গায় সর্বোচ্চ ২৫ টাকা অর্থাৎ ৫৭ শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে বলে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তবে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের দাম ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ব্যবহূত গ্যাসের বর্তমান হার যথাক্রমে ১১ দশমিক ৯৮, ১১ দশমিক ৭৮ ও ১০ দশমিক ৭৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বস্তরে একই হার ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৫ দশমিক শূন্য ২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মূল্য কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প খাতে আরো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসা পরিচালনার খরচ আরো বেড়ে যাবে। স্থানীয় শিল্প ও রফতানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে অত্যধিক হারে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে এ খাতের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্যাসের দাম সমন্বয়ের বিপক্ষে আমরা নই। সব ধরনের ভোক্তাদের ওপর চাপ না দিয়ে জ্বালানি খাতের রাজস্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে বর্তমান মূল্য থেকে আমাদের প্রস্তাবিত ৫৭ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ক্যাপটিভ ও অন্যান্য খাতে গ্যাসের দাম পুনর্র্নিধারণের জন্য আপনার সদয় নির্দেশনা কামনা করছি, যা আগামী এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে পারে। সেই সঙ্গে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদনের স্বার্থে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ এবং মূল্য ক্রমান্বয়ে বাড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানায়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে ২৪ জানুয়ারি সংগঠনটির পক্ষ থেকে পৃথক চিঠি দেয়া হয়।