আল্লামা ইসহাক আল মাদানী: আমাদের প্রেরণা
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:১৬:২৩ অপরাহ্ন
মাহমুদুর রহমান দিলাওয়ার:২০ জানুয়ারি সকাল ৮ টায় সিলেটের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন খ্যাতিমান আলেমেদ্বীন, ইসলামী চিন্তাবিদ ও শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসহাক আল মাদানী। তিনি আমার শ্রদ্ধেয় উস্তাদ। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল, ৭ম থেকে কামিল পর্যন্ত শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা পাঠানটুলায় অধ্যয়নের সুযোগ হয়েছিল। তিনি জামেয়ার প্রধান মুহাদ্দিস ছিলেন। তাই ছোটোবেলা থেকেই তাঁকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বিশেষ করে আলিম-কামিলে অধ্যয়নকালে মুহতারামকে সরাসরি ক্লাসে পেয়েছি। অনেক কিছুই শিখেছি। সময় ও সুযোগে ইন্তেকালের পূর্ব লগ্ন পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করেছি। জানার চেষ্টা করেছি। দেখা হলেই উপদেশ গ্রহণের আগ্রহ থাকতো। সর্বশেষ সাক্ষাৎ হলো, ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ইং। এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ময়দানে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেট আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে। শেষ রজনীতে সমাপনী আলোচনা পেশ করেন মিজানুর রহমান আযহারী। তিনি আযহারী সাহেবের বাম পাশে বসা ছিলেন। প্রধান মুফাসসির মঞ্চে আসার পর চেয়ারে বসার পূর্ব মুহূর্তে শ্রদ্ধেয় উস্তাদের সাথে বিনয়ের সাথে কুশল বিনিময় করেন। যে দৃশ্যটি অনুপ্রাণিত করেছে। মাহফিল শেষে মঞ্চে প্রথমেই উস্তাদের কাছে গেলাম। বললাম, জনাব! আমার লিখিত প্রথম বই, ক্ষুদ্র প্রয়াস ‘আঁধারে আলোর ঝলকানি’ প্রকাশিত হয়েছে। কোনো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন কিংবা মোড়ক উন্মোচন করা হয় নি। শুরুতেই আপনার দোয়া নিতে চাই। সময় ও সুযোগে পরামর্শ নেবো ইন শা আল্লাহ। তিনি মুচকি হাসি দিয়ে তা গ্রহণ করলেন। উৎসাহ ও দোয়া দিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সম্মানিত শিক্ষকের আলোচনা, সর্বোচ্চ মনোযোগ সহকারে উপলব্ধির চেষ্টা করেছি, সবসময় উজ্জীবিত হয়েছি।
তিনি শুধু বৃহত্তর সিলেটের নন, গোটা দেশের আলেমসমাজের মাঝে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। প্রচারবিমুখ এই আলেমেদ্বীনের ব্যাপারে ত্বালিবে ইলমসহ ইসলামপ্রিয় সকল মানুষের জানা দরকার। আবু উমামা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসলো আর আল্লাহর জন্যই কাউকে ঘৃণা করলো, আর আল্লাহর জন্য কাউকে দান করলো এবং আল্লাহর জন্যই দান করা থেকে বিরত থাকলো; তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করলো। [আবু দাউদ]। আবু যর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন: সবচেয়ে উত্তম আমল হচ্ছে, আল্লাহর জন্য ভালোবাসা আর আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা। [বায়হাকী]।
৯ অক্টোবর ১৯৫৩ সালে জুম’আ বারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ফাযেলে দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারতের মুফতি মাযহারুল ইসলাম ওসমান কাসিমী কর্তৃক রচিত এশিয়া মহাদেশের বিখ্যাত ইসলামী মনীষীদের ছাত্রজীবনের বর্ণনা সম্বলিত বই: বিখ্যাত ১০০ ওলামা মাশায়েখের ছাত্রজীবন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে ৩৮৪ পৃষ্ঠার বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। যে গ্রন্থের শুরুতেই স্থান পেয়েছে, ইমাম আজম আবু হানীফা র. ও আল্লামা ইমাম গাজ্জালী র.-এর জীবনী। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের ২৪৭-২৫০ পৃষ্ঠায় শায়খ ইসহাক আল মাদানী র.) সাহেবের জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। শিরোনাম: ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক হজরত মাওলানা শায়খ ইসহাক আল-মাদানী। উক্ত বইটিতে মদীনা ইসলামী ইউনিভার্সিটি, মক্কা উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি, রিয়াদ জামেয়া সাউদ ইসলামী ইউনিভার্সিটি এবং মিশরের আল আযহার ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রীপ্রাপ্ত পাক বাংলা ভারতের অন্য কোনো স্কলারের জীবনী স্থান পায় নি।
তিনি ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কামিল (হাদিস) বিভাগে ১ম বিভাগে ২য় স্থান অর্জন করেন। ঐ সেশনে সারাদেশে মাত্র ৪জন ছাত্র ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। বায়তুল মোকাররমের খতীব মাওলানা উবায়দুল হক জালালাবাদী এবং মুহাদ্দিস মাওলানা ফযলে হক ফাযেলে দেওবন্দের কাছ থেকে তিনি হাদীসের উচ্চতর সনদ লাভ করেন। ঐ বছরেই তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের ৬০ বছর দায়িত্বপালনকারী মহাপরিচালক ক্বারী তৈয়্যব কাসেমীর কাছ থেকে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মিলনায়তনে হাদিসের ইযাযত অর্জন করেন।
১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে অনার্স কোর্সে চান্স পান। স্যার সলিমুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। দু’বছর যেতে না যেতেই ১৯৭৮ সালে তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। মেধার ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও দু’জন শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। তাঁরা হলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক, আসহাবে রাসুলের জীবনকথা বইয়ের লেখক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের আরেকজন অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ আব্দুল্লাহ। উক্ত তিনজন মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ১ম ব্যাচের ছাত্র। তিনজনই আরবি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। শায়খ ইসহাক আল মাদানী অনার্স প্রথম বর্ষেই ১১০টি দেশের ছাত্রদের সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে প্রথম বিভাগে ১ম স্থান অর্জন করেন। প্রতিটি বর্ষেই তিনি কৃতিত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন এবং ১৯৮৩ সালে অনার্স সমাপনীতে তিনি ১ম বিভাগে ১ম স্থান অধিকার করেন। আরবি ভাষা বিভাগে ঐবছর আর কেউ ১ম বিভাগ অর্জন করতে পারেন নি। ৯০% মার্কসসহ উত্তীর্ণ হয়ে একমাত্র তিনিই কৃতিত্বের অনন্য স্বাক্ষর উপস্থাপন করেন। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশী ছাত্র, যিনি একইসাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা বিভাগে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জনকারী। তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ছাত্রদের অংশগ্রহণে আয়োজিত আরবি ভাষাতত্ত্ব বিষয়ক প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেন এবং আরবি ভাষায় সর্ববৃহৎ অভিধান-লিসানুল আরব গ্রন্থটি পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিলেন। তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষায় ৩টি বিষয়ে থিসিস লিখেছিলেন। যা এখনো আরবি ভাষা বিভাগে রেফারেন্স হিসেবে স্বীকৃত। বিষয়গুলো হলো: ১. স্পেনে আরবি সাহিত্যের বিকাশ ২. মিশরে আধুনিক আরবি সাহিত্যের বিকাশ ৩. আরবি ভাষার অলংকার শাস্ত্রে আবুল কাহির জুরজানীর অবদান। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে এমএ ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং ফাস্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন। একই বছরে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ফাস্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়ে তৎকালীন ভিসি এম. মনিরুজ্জামান মিয়ার কাছ থেকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চো নম্বর নিয়ে এমফিল করেন। ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে পি.এইচ.ডি প্রোগ্রামে যোগদান করেন। মাদ্রাসার ইতিবৃত্ত, বৃহত্তর সিলেট শিরোনামে অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমানের তত্ত্ববাবধানে পি.এইচ.ডি পেপার তৈরি করতে থাকেন। অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ইন্তেকাল করেন। অতঃপর তিনি অন্য কারো তত্ত্বাবধানে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী নিতে আগ্রহী হন নি। ফলে তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রী নেয়া হয় নি।
তিনি সৌদি আরবের গ্রান্ডমুফতী আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায কর্তৃক ০৬/৫/ ১৪০৪ হিজরী মোতাবেক ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের সিলেটে দাঈ ইলাল্লাহ হিসেবে নিয়োগ পান। ০৫/১০/১৯৮৩ ইং থেকে ১৭/০৫/২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সৌদি রাজকীয় দূতাবাসের রিলিজিয়াস এট্যাচি এর তত্ত্বাবধানে বৃহত্তর সিলেটে ইসলামের দাওয়াতী কাজ করেন। সৌদি রাজকীয় দূতাবাস ১৫ মার্চ ২০২১ সালে তাঁকে একজন ইসলামিক স্কলার হিসেবে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে।
তিনি মদীনার মসজিদে নববীর প্রধান ইমাম ও খতীব শায়খ আব্দুর রহমান বিন আলী হুযায়ফীর কাছে ইলমুল ক্বেরাত পড়েন।
তিনি দীর্ঘদিন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় শায়খুল হাদীস পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও মিশকাত শরীফের দরস দিয়েছেন। দেশ-বিদেশে তাঁর হাজারো ছাত্র রয়েছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালনরত প্রিন্সিপাল, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও মুফতি অনেকেই তাঁর ছাত্র। বৃহত্তর সিলেটের অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, মহিলা মাদ্রাসা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, ইয়াতীমখানা ও ইসলামী পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে সৌদি সরকারের আর্থিক অনুদানে এ সকল কাজ সম্পন্ন হয়।
তিনি নিম্নবর্ণিত দায়িত্ব পালন করেছেন: ১. কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা, বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীন। ২. প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সৌদি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ সিলেট, বাংলাদেশ। (১৯৭৮ সালে নিবন্ধিত)। ৩. সহ-সভাপতি, লাজনাতুল বুহুছ আল-ইসলামিয়া। ৪. প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, তাহফীযুল কুরআন শিক্ষাবোর্ড, সিলেট, বাংলাদেশ। ৫. প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, উলামা মাশায়েখ পরিষদ, সিলেট, বাংলাদেশ। ৬. সহ-সভাপতি, আনজুমানে খেদমতে কুরআন, সিলেট। ৭. প্রধান উপদেষ্টা, ইত্তেহাদুল কুররা বাংলাদেশ। ৮. খতীব, হাউজিং এস্টেট জামে মসজিদ, সিলেট। (৩০ বছর দায়িত্বপালন করেছেন)। ৯. তাফসীরকারক, হাজী কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ, সিলেট। (৩০ বছর)। ১০. আজীবন সদস্য, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, সিলেট।
তাঁর লিখিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী: ১. তাওহীদ ও ইসলামী আক্বিদার গুরুত্ব ২. মসজিদে নববীর যেয়ারত ৩. আল্লাহর ভালবাসা অর্জনের উপায় ৪. ইসলামে কবর যেয়ারত ও উরুস ৫. নাসীমুল আরাবিয়াহ ৬. রাওযাতুল আত্বফাল ৭. দিরাসাতুল আরাবিয়াহ (সিরিজ: ১-৫) ৮. তাওহীদ বেহেশতের চাবিকাঠি (অপ্রকাশিত) ৯. মুসলিম উম্মার ঐক্য (অপ্রকাশিত)। তাঁর প্রত্যাশা ছিল ওলামাদের ছোটো ছোটো এখতেলাফ দূর হয়ে ইসলাম ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হোক।
শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের অনেক স্মৃতি বারবার মনে পড়ছে। তাঁর দরদ ভরা কন্ঠের নসীহতগুলো আজীবন প্রেরণা যোগাবে। দেখা হলেই মহব্বতের সাথে খতীব মাহমুদুর রহমান দিলাওয়ার বলে সম্বোধন করতেন। বক্তা বলে ডাকতেন। গাইডলাইন দিতেন। যেকোনো প্রয়োজনে কল করতেন। দ্বিধাহীন চিত্তে সত্য প্রকাশ করতেন। অভিমত পেশ করতেন। বাসায় গেলে খুশি হতেন। আলোচনা শুনে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কীভাবে কথা বললে জাতি উপকৃত হবে, শিখিয়ে দিতেন। তিনি হক্বের পক্ষে আপোষহীন ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। দাওয়াতে দ্বীনের ময়দানে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি বিশ্বনন্দিত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর র. উপমা তুলে ধরতেন।
লেখক: সহকারী জেনারেল সেক্রেটারী, বাংলাদেশ মাজালিসুল মুফাসসিরীন