শান্তিগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুন ২০২৫, ৬:৩৫:২১ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি:
পারিবারিক ও বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার জামলাবাদ গ্রামে প্রতিবেশীর হামলায় নজরুল ইসলাম (৪০) নামের এক যুবদল কর্মী নিহতের ঘটনার ৬ দিন পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহতের ভাই জালাল হোসেন বাদী হয়ে শান্তিগঞ্জ থানায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনকে আসামী করে এই মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার পক্ষে নিহতের বোন নাসিমা বেগম থানায় অভিযোগ জমা দেন। শুক্রবার (২০ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মামলাটি রেকর্ড করেন শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরম আলী।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় এতো সংখ্যক আসামীর নাম উল্লেখ এবং অনুল্লেখিত আরো ১৫/১৬ জনের নাম তালিকায় রাখায় জামলাবাদ গ্রামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জামলাবাদ গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পুরুষ মানুষের উপস্থিতি নেই। কোনো কোনো বাড়িতে নেই মহিলারাও। বাড়িতে তালা দিয়ে কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আসামীপক্ষের লোকেরা। নিহত নজরুল ইসলামের লোকজনের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে নজরুল ইসলামের বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। কথা হয় পাশের ঘরের হাসিনা বেগমের কলেজপড়ুয়া মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, তাজ উদ্দিন ও নজরুল ইসলামরা প্রায়ই ঝগড়া করতেন। আমার মা তাদেরকে ঝগড়া করতে নিষেধ করতেন। নজরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর তারা আমার মাকেও আসামী করেছেন। এখন আমার মাও বাড়িছাড়া। অথচ আমার আম্মু এই ঘটনার সাথে জড়িতই ছিলেন না। শুধুমাত্র আমাদের বাড়ির সামনে এসে ঝগড়া করতে বারণ করেছিলেন।
কথা হয় এই গ্রামের আবিদা সুলতানা ও কামরুন নাহার রুনার সাথে। তারা বলেন, হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তি হোক এটা আমরাও চাই। কিন্তু কিছু নিরীহ লোককে আসামী করা হয়েছে। ১৮ বছরের নিচে কিছু অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকেও আসামী করা হয়েছে। এটা নিন্দনীয়। এছাড়াও আমাদের বাড়িতে চুরি করারও চেষ্টা করছে একটি মহল। তবে স্থানীয়রা বলছেন, চুরির চেষ্টা বা চুরির ঘটনা ঘটেছে এমন কিছু তারা শোনেননি।
এ বিষয়ে নিহতের বোন নাসিমা বেগম বলেন, আমাদের কোনো লোকই বাড়িতে নেই। আমার ভাই জালাল হোসেনের চিকিৎসার জন্য সিলেটে আছি। আজ আমার মা বাড়িতে যাচ্ছেন। আমিও যাবো। আমরা নিরপরাধ কাউকে আসামী করিনি। আমার জীবিত ভাই জালাল হোসেন যাদেরকে মারামারিতে দেখেছেন তাদেরকেই আসামী করা হয়েছে। আর সুজন চেয়ারম্যান তার আত্মীয় স্বজনকে পরিচালনা করছেন। যিনি পরিচালনা করছেন তাকে তো আর ছেড়ে দেওয়া যায় না। আমি আমার ভাই হত্যার সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেছি।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বলেন, চুরি হচ্ছে এমন কোনো ঘটনার খবর আমরা পাইনি। মামলা ইতোমধ্যে রেকর্ড করা হয়েছে। যদি কেউ মারামারির ঘটনায় জড়িত না থাকে আর তার নাম মামলায় থাকে তাহলে তদন্ত করে তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।