সৌদী পারসোনাল ভিজিট ভিসা প্রসঙ্গে
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৫:৪৩ অপরাহ্ন
সৌদী আরব গোটা বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানদের হৃদয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। কারণ এই দেশে পবিত্র কা’বা ও মহানবী (সাঃ) এর রওজা মোবারক অবস্থিত। আর এখানেই পালন করতে হয় মুসলমানদের অন্যতম ফরজ হজ্ব। তাই এদেশের মুসলমানদের আকাক্সক্ষা জীবনে একবারের জন্য হলেও যেনো সৌদী আরবের মক্কা ও মদীনায় যাওয়া যায়। এই সৌদী আরবে প্রায় ৩০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মরত। প্রবাসী আয় অর্থাৎ রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রে সৌদীআরব শীর্ষে অবস্থান করছে। এভাবে সৌদী আরবের সাথে বাংলাদেশের শুধু বন্ধনই নয়, আর্থিক সম্পর্কও বিদ্যমান। সম্প্রতি সৌদী আরবের প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক আরব নিউজ এ ‘সৌদী অ্যারাবিয়া এনাউন্সেজ মেকানিজম ফর পারসোনাল ভিজিট ভিসা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সৌদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পারসোনাল ভিজিট ভিসা ইস্যুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পর্যটক ও দর্শনার্থীরা সেদেশের বন্ধু বান্ধব কিংবা পরিচিত জনের আমন্ত্রণে এই ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভিসা পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি উমরাহ পালনসহ সৌদী আরবের বিভিন্ন অঞ্চল ও নগরীসমূহ ভ্রমন করতে পারবেন। একইভাবে ভিসাধারী ব্যক্তি মদীনার মসজিদে নববীসহ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো দর্শন করতে পারবেন। এমনকি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সৌদী নাগরিকরা তাদের বিদেশী বন্ধু বান্ধব ও পরিচিত ব্যক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ের ই-ভিসা প্লাটফর্মে পারসোনাল ভিসার জন্য অনুরোধ দাখিল করবেন এবং ইউনিফাইড ন্যাশনাল এক্সেস প্লাটফর্মে লগিং করে ‘ভিজিট রিক্যুয়েষ্ট’-এর জন্য আবেদন করবেন এবং আমন্ত্রণকারীর জন্য ডাটা বা উপাত্ত প্রদান করবেন। এরপর রিক্যুয়েস্ট বা অনুরোধটি প্রক্রিয়া করা হবে এবং পারসোনাল ভিজিট ডকুমেন্ট ইস্যু করা হবে, যাতে ইনভাইটেশন রিক্যুয়েস্ট অনুসন্ধান সার্ভিসের মাধ্যমে ডাটা দেখা যাবে।
সৌদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ভ্রমণের জন্য আমন্ত্রিত ব্যক্তি ফী ও স্বাস্থ্যবীমা প্রদানের প্রক্রিয়া পূরণ করবেন ভিসা প্লাটফর্মে। এরপর আবেদনপত্র ও পাসপোর্ট দাখিল করবেন অতিথি দেশে সৌদী আরবের দূতাবাস বা কনস্যুলেটে কর্তৃক নির্ধারিত সেন্টার বা অফিসে। ভিসাধারীরা আকাশ, ভূমি কিংবা সাগরপথে সৌদী আরবে প্রবেশ করতে পারবেন। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, ভিসা প্লাটফর্মে প্রবেশপূর্বক ইনকোয়ারি আইকন নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় ডাটা ফিলিং করে এবং অত:পর ইনকোয়ারি আইকনে ক্লিক করে দাখিলকৃত আবেদনের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা যাবে।
সৌদী আরবের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন দেশ, বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশসমূহের নাগরিকদের জন্য উপরোক্ত পারসোনাল ভিজিট ভিসা কার্যক্রমটি অত্যন্ত সুবিধাজনক হবে। অনেকের জন্য ওমরাহ পালনসহ সৌদীআরব ভ্রমণের বিরল সুযোগ এনে দেবে এই ভিসা কর্মসূচী। স্মরণ করা যেতে পারে যে, আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক কর্মীদের সৌদী আরবে গমন শুরু হলে অনেক বাংলাদেশীকে ওমরাহ ভিসায় সেখানে গিয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে দেখা গেছে। তখন ওমরাহ ভিসা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছিল সৌদী গমনেচ্ছু তরুণ যুবাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজনের মাঝে।
পারসোনাল ভিজিট ভিসায় সৌদী আরবে যাওয়ার সুযোগ অবারিত হলে সেদেশে জনশক্তি রফতানীর ক্ষেত্রে গতিশীলতা আসবে এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট মহলের। আমরা চাই বাংলাদেশের সৌদী আরব ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা এই নতুন ভিসার সুযোগ গ্রহণ করবেন এবং ধর্মীয় ভ্রমণের পাশাপাশি কর্ম ও ব্যবসা অনুসন্ধানের এই সুযোগকে কাজে লাগাবেন যাতে দেশ ও জাতি উপকৃত হয়।