শিক্ষার্থীদের হাতের লেখায় গুরুত্ব দেয়া হোক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০২৩, ১২:৩০:৪১ অপরাহ্ন
বর্তমান সময়ে স্কুল কিংবা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না। এ ব্যাপারে বেশীর ভাগ ছাত্রছাত্রী যেমন অমনোযোগী তেমনি শিক্ষকরাও সতর্ক ও আগ্রহী নন। ফলে এ বিষয়টি অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় ভালো করলেও তাদের হাতের লেখা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অস্পষ্ট ও অসুন্দর থেকে যাচ্ছে।
সুন্দর হাতের লেখা একটি দীর্ঘকালীন অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার বিষয়। স্কুলের নিম্নপর্যায় থেকে এজন্য অনুশীলন করতে হয়। তিন/চার যুগ আগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষভাবে পাঠশালা বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের হাতের লেখার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো। হাতের লেখার জন্য পুরস্কার ও ভর্ৎসনার ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু কালক্রমে এ বিষয়টি গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। এছাড়া বর্তমানে কম্পিউটার-ইন্টারনেটের বহুল প্রচলন হওয়ায় সুন্দর হাতের লেখা নিয়ে এখন আর কেউ তেমন মাথা ঘামান না।
ফলে স্কুল পর্যায়ে হাতের লেখা সুন্দর না হওয়ার কুফল একজন শিক্ষার্থীকে ভোগ করতে হচ্ছে বাকী জীবনব্যাপী। পেশাগত ক্ষেত্রেও অনেক সময় অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। অনেক পেশা আছে যেগুলোর হাতের লেখা স্পষ্ট ও সুন্দর হওয়া অপরিহার্য। তাই হাতের লেখা যথাযথ ও কাংখিত মানের না হওয়ায় তার পক্ষে সেসব চাকুরী পাওয়া সম্ভব হবে না। দেখা গেছে, শুধুমাত্র হাতের লেখা বাজে হওয়ার কারণে অন্যান্য যোগ্যতা থাকা সত্বেও অনেকের পক্ষে এই কম্পিউটারের যুগেও কাংখিত চাকুরী লাভ কিংবা পেশায় উন্নতি লাভ করা সম্ভব হয় না।
হাতের লেখা একটি শৈল্পিক ব্যাপার। এ শিল্পে পারদর্শিতার জন্য গোঁড়া থেকেই পরিশ্রম প্রয়োজন। প্রয়োজন নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়। তবে একটু মনোযোগী হলে যে কোন বয়সেই হাতের লেখাকে স্পষ্ট ও মানসম্পন্ন করা সম্ভব। আমরা চাই আমাদের স্কুলের কোলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই বাংলা, ইংরেজী কিংবা আরবী যে কোন ভাষায় হাতের সুন্দর লেখার চর্চা ও অনুশীলন করুক। তাদের হাতের লেখা পড়তে গিয়ে পরীক্ষকসহ ভবিষ্যত জীবনে কেউ যেনো কখনো বিরক্তিবোধ না করে কিংবা কাউকে যেনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।
শুধু হাতের লেখার কারণে সে যেনো পরীক্ষায় পূর্ণ নম্বর প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয়। আমরা এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অধিকতর মনোযোগ কামনা করি।