ফেঞ্চুগঞ্জ কল্যাণ সমিতি ইউকে’র একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২৩, ৬:২২:৩১ অপরাহ্ন
লন্ডন সংবাদদাতা :
ফেঞ্চুগঞ্জ কল্যাণ সমিতি ইউকের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে নির্বাচন কমিশন ছাড়াই একটি মাত্র প্যানেলের প্রার্থীদের দিয়ে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করছেন প্রস্তুতি কমিটি।
গত (৩০ মে) মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে ফেঞ্চুগঞ্জ কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত অভিযোগ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের নির্বাহী সদস্য জুবের আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সাংবিধানিক মেয়াদ ৩ বছর পরিপূর্ণ হওয়ার পর ৩০ অক্টোবর ২০২২ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় নতুন একটি কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই তিন সদস্য হলেন, সমিতির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ ফজলুর রব সুহেল, সহ-সভাপতি গোলাম মস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির খান। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি নির্বাহী কমিটি ও ফেঞ্চুগঞ্জের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত একসভায় উক্ত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির তিন সদস্যকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে আরো ৭ ব্যক্তিকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। তারা হলেন কাজি নোমান, আফতার আহমদ, আলী আহমদ খান, কাপ্তান মিয়া, আবু সামী, আ ফ ম আতাউল গনী ও আলিম উদ্দিন। তখন নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১০জন। উক্ত সভায় তিন জন নির্বাচন কমিশনারও মনোনীত করা হয়। তাঁরা হলেন- কে এম আবু তাহের চৌধুরী, নিউহ্যাম কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ ও জাষ্টিস বেলায়েত হুসেন। কিন্তু এর পরেই ঘটে বিপত্তি। নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য (সমিতির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) শাহ ফজলুর রব সুহেল অপর দুই সদস্য সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান ও সহ-সভাপতি গোলাম মস্তফাকে পাশ কাটিয়ে সহযোগী ৭ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন প্রস্তুতির কাজ শুরু করেন। শুধু তাই নয়, তারা নির্বাচন কমিশনকেও এড়িয়ে চলেন। তারা সংবিধান বহির্ভূত কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন। সদস্য নবায়ন ফি ২৫ পাউন্ডের পরিবর্তে ৫০ পাউন্ড, নির্বাচনে বিভিন্ন পদের নমিনেশন ফি ৫০০ পাউন্ডের পরিবর্তে ১৫০০ পাউন্ড নির্ধারণ করেন, যা গত নির্বাচনের তুলনায় তিনগুণ বেশী। উক্ত ঘোষণার খবর সমিতির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচার হলে অনেকেই এর বিরোধিতা করেন। উক্ত নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির বরাবরে সমিতির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে তিনটি চিঠি প্রেরণ করা হয়, তাদের কাছে অনুরোধ করা হয় সাধারণ সদস্যদের ডেকে আলোচনা সাপেক্ষে ফি নির্ধারণ করার জন্য। কিন্তু এতে তারা কোনো কর্ণপাত করেননি।
পরবর্তীতে তাদেরকে সংবিধান পরিপন্থি কাজ থেকে থামাতে ফেঞ্চুগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ জনের একটি প্রতিনিধি দল তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। তারা একতরফা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। যার ফলে গত নির্বাচনে যেখানে সমিতির সদস্য সংখ্যা ছিলো ৬০১ জন। এ বছর তাদের নিকট সদস্য সংখ্যা নিবন্ধন হয়েছে মাত্র ১২৩ জন।
এমতাবস্থায় তারা নির্বাচন কমিশনের সাথে কোনো যোগাযোগ ছাড়াই আগামী ৪ জুন ২০২৩ তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করে দেন। এই নির্বাচনের জন্য মাত্র একটি প্যানেল নমিনেশন জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনবিহীন এই নির্বাচনের কোনো প্রতিন্দ্বিতা নেই, আমেজ নেই, উচ্ছ্বাস নেই। ফেঞ্চুগঞ্জের বৃহত্তর জনসাধারণের অংশগ্রহণ অনুপস্থিত বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জ কল্যাণ সমিতি ইউকের সহ-সভাপতি সহিদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এনামুল হক চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রেখী, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর, সহ কোষাধ্যক্ষ বদরুল ইসলাম রাজা, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, হাবিব আহমদ।