জরুরী কাজে দীর্ঘসূত্রিতা কেনো?
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩০:১৬ অপরাহ্ন
এশিয়ার দেশ চীন এমনকি ভারতও যখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি বহুতল ভবন কিংবা বড়ো সেতু তৈরী করে ফেলতে সক্ষম তখন বাংলাদেশে একটি কালভার্ট নির্মাণে কয়েক মাস লেগে যেতে দেখা যাচ্ছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন নগরীর ঝর্ণারপার এলাকায় একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয় কয়েক মাস আগে। কিন্তু ১০/১২ ফুট দীর্ঘ এই কালভার্টটির নির্মাণ কাজ আজো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। গতকাল মিডিয়ায় ‘দুই মাস পরও শেষ হয়নি সিলেটের ক্বীনব্রীজের মেরামত কাজ, বাড়ল ভোগান্তি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সিলেটের ক্বীনব্রীজ মেরামতের কাজ দুই মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও মেরামত ও সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল প্রকৌশল বিভাগ। এখন এই বিভাগ বলছে, ক্বীনব্রীজের মেরামত কাজের জন্য আরো দেড় মাসের মতো সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে নভেম্বর পর্যন্ত যানবাহন ও পথচারীদের জন্য ক্বীনব্রীজ বন্ধ থাকবে।
নির্দিষ্ট সময়ে মেরামত কাজ শেষ না হওয়ায় ক্বীনব্রীজের দুই পাশের বিপুল সংখ্যক অধিবাসী ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতোদিন লোকজন সেতুটির মেরামতের স্বার্থে চলাচলে কষ্ট ও অতিরিক্ত অর্থব্যয়ের বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন। এখন এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী কাজের ক্ষেত্রে খামখেয়ালী ও ঢিলেমি দেখে যারপরনাই হতাশ। একটি নাতিদীর্ঘ সেতু নির্মাণ নয়, শুধু মেরামত ও সংস্কার কাজে এতো দীর্ঘ বিলম্ব তাদের চরম অসুবিধার মধ্যে ফেলেছে। অন্যান্য কাজে দীর্ঘসুত্রিতাযর মতো কর্তৃপক্ষ এই জরুরী কাজটিতেও যথেষ্ট মনোযোগ না দেয়ায় ক্ষুব্ধ নগরীর লাখ লাখ মানুষ। কারণ এই সেতু দিয়ে নগরীর দুই বিশাল অংশের লোকজনসহ বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রামাঞ্চল থেকে আসা লোকজনকে যাতায়াত করতে হয়। এই সেতুর বিকল্প আরো সেতু থাকলেও অনেক রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এতে যেমন সময়ের অপচয় হয়, তেমনি অনেক বাড়তি অর্থ ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়। বর্তমানে এই মূল্যস্ফীতি তথা জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে অনেকের পক্ষে এই বাড়তি ব্যয় প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিশেষভাবে সাধারণ চাকুরীজীবীসহ স্বল্প আয়ের অন্যান্য পেশার মানুষের জন্য ক্বীনব্রীজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নৌকায় নদী পারাপার যেমন বিপজ্জনক তেমনি সময়ের অপচয় হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এছাড়া জরুরী রোগী নিয়ে ক্লিনিক হাসপাতালে যেতেও অসুবিধায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। এসব বিবেচনায় গাফিলতি কিংবা দীর্ঘসূত্রিতা দূর করে অনতিবিলম্বে ক্বীনব্রীজের মেরামত কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জনগণ। এর পাশাপাশি সিলেটের অন্যতম প্রতীক হিসেবে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী ক্বীনব্রীজের কাজ যাতে দুর্নীতিমুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, এমন দাবিও নগরবাসী তথা সিলেটের জনগণের। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে সুদৃষ্টি দেবেন।