ইসরাইল ‘ঘৃণা’র সমার্থক!
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩০:৪৮ অপরাহ্ন
বিশ্বে এখন ‘ঘৃণা’ শব্দের সমার্থক হয়ে ওঠেছে অবৈধ দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল। গায়ের জোরে অন্যায়ভাবে পৌণে এক শতক আগে অন্য একটি দেশের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরাইল। ফিলিস্তিনীদের সাথে প্রতারণা ও বিতাড়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত ইসরাইলকে বিশ্বের মানুষ কেনো এতো ঘৃণা করে এর হাজারো কারণ রয়েছে। একেতো দেশটি অবৈধভাবে ফিলিস্তিনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারপর দিন দিন তাদের অবৈধ দখলকে আরো বিস্তৃত করছে। এজন্য আশ্রয় নিচ্ছে নৃশংস হত্যা, নিপীড়ন, নির্যাতন এমন সশস্ত্র যুদ্ধের। তবে এ নিয়ে বিশ্ববাসী এতো দিন নীরব থাকলেও এখন তারা সরব হতে শুরু করেছেন। জার্মানীসহ ইউরোপের অনেক দেশ যেমন আয়ারল্যা-, স্পেন ও বেলজিয়াম ইতোমধ্যে ইসরাইলের গণহত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ ও ল্যাটিন আমেরিকার অনেকগুলো দেশ এতে শরিক হয়েছে। ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
সম্প্রতি ইসরাইলী মানবাধিকার সংস্থা ‘বিৎসেলেম’-এর তথ্য মতে গত সেপ্টেম্বরে ১৪৬ অপ্রাপ্ত বয়স্ক ফিলিস্তিনীকে কারাগারে আটকে রেখেছে ইসরাইল। আর সেপ্টেম্বরের পর বিশেষ করে ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতা শুরুর পর এ সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। মানবাধিকার সংস্থা ‘ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল’ বলেছে, প্রতি বছর ৫শ থেকে ৭শ শিশুকে কারারুদ্ধ করে ইসরাইল, যাদের বেশীর ভাগই ১২ বছর বয়সী।
ইসরাইলের প্রতি ফিলিস্তিনীদের ঘৃণা ও ক্ষোভের এটাও একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সচেতন মহল। শুধু ফিলিস্তিনীই নয় বরং গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ এ ধরণের কর্মকান্ডকে ভালো চোখে দেখছেন না। বিশেষ করে সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে ইসরাইল যে গণহত্যা চালিয়েছে এতে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। গাজায় এই যুদ্ধে যত মানুষ নিহত হয়েছে এর সিংহভাগই নারী ও শিশু।
জার্মানীর জনপ্রিয় মিডিয়া ‘ডয়েচ ভেলে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইদানিং জার্মানিতে ইহুদী বিদ্বেষ ৩০০ শতাংশেরও বেশী বেড়েছে। গত ৭ অক্টোবরের পর গাজায় ইসরাইলী নৃশংস হামলার পর থেকে জার্মানীতে প্রায় এক হাজার ইহুদী বিদ্বেষমূলক ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর মধ্যে দিনে গড়ে অন্তত: ২৯ টি ইহুদী বিদ্বেষী ঘটনা ঘটেছে জার্মানীতে। এর আগে রাশিয়ায় ইহুদীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। চীনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় ইসরাইলী কূটনীতিককে।
এভাবে ইসরাইলী ইহুদীবাদীদের হত্যা, অন্যায়, অপকর্মের দরুণ গোটা ইহুদী জাতি আজ বিশ্বে অনেকটা ‘অচ্ছ্যুত’ প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। দিন দিন এটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সচেতন মহলের মতে, ইসরাইলীরা যতো দিন না ফিলিস্তিনী ভূখন্ড ফিরিয়ে দেবে বা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে মেনে নেবে, ততোদিন ইহুদীদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীসহ গোটা বিশ্বের মানুষের এই ঘৃণা দূর হবে না। যতোদিন না ইসরাইলীরা হত্যা নির্যাতন বাদ দিয়ে শান্তির পথে ফিরে আসবে ততোদিন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরে আসবে না।