আল বিদা মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:১৯:০৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: মাহে রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল দান-খয়রাত করা। নবী করীম সা. রমজানে মাসে অধিক হারে, বিপুল পরিমাণে সদকা করতেন। ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, রাসূল সা. মানুষের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ছিলেন।
রমজানে তিনি আরো বেশি দানশীল হতেন। দান বা সদকা করাকে রাসূল সা. খুবই উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেন, এক টুকরো খেজুর সদকা করে হলেও তোমাদের এবং জাহান্নামের মাঝে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করো। রাসূল সা. এর দানশীলতা ছিল ব্যাপক। মুক্ত বায়ুর কল্যাণ যেমন সবার কাছে পৌছে যায়, রাসূল সা. এর দানও পৌঁছে যেতো সবার কাছে নির্বিশেষে। নবী সা. বলেছেন, সদকা আল্লাহর ক্রোধ নিবারণ করে এবং নিকৃষ্ট মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে। রাসূল সা. আরো বলেছেন, কিয়ামতের দিন সদকা মুমিনের জন্য ছায়া হিসেবে কাজ করবে।
কাজেই আমাদের উচিত সবসময় নিজের সাধ্যমতো কিছু দান করা। দান করা এটি একটি সুন্দর অভ্যাস। দানে সম্পদ কমে না বরং এর বরকত বেড়ে যায় অনেক। দানের চর্চা স্বচ্ছল ব্যক্তিদের সমাজের অবহেলিতদের দিকে দৃষ্টি দেবার একটি সংস্কৃতি তৈরি করে। এতে সমাজে সুন্দর একটি সাম্যের আবহ বিরাজ করে।
রমজানে যেহেতু নেকির পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় কাজেই রমজানে আমাদের দান বা সদকার পরিমানও বাড়িয়ে দেওয়া দরকার। এতে অনেক সওয়াব অর্জনের একটি সুযোগ মিলে। পাশাপাশি আমাদের দানের ফলে অনেক অসহায় মুসলমান সুন্দর করে রোজা পালন করতে পারে, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। দানের সওয়াবের সাথে সাথে মানুষের মনে যদি আমরা সামান্য একটু আর্থিক সাহায্য দিয়ে আনন্দ দিতে পারি তো এটি আমাদের জন্য আলাদাভাবে আরো সওয়াব অর্জনের একটি মাহেন্দ্রক্ষণ বলা যায়। তাই রমজানের এই সময় বিশেষ করে ঈদের এই আগ মুহূর্তে আমাদের এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
এর সাথে সাথে যাদের উপর জাকাত বা ফিতরা অবধারিত হবে তাদের এগুলো যথার্থভাবে আদায় করা দরকার। জাকাত এবং ফিতরা ধনীদের উপর গরীবের অধিকার। রমজানে আমরা চাইলে গরীবকে তার সেই অধিকার বুঝিয়ে দিতে পারি।
জাকাত ইসলামের পাঁচটি বুনিয়াদের মধ্যে একটি। এটি সম্পদকে পবিত্র করে। কুরআনে আল্লাহ বারবার সালাতের সাথে সাথে জাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই জাকাত অবহেলার কোনো বিষয় নয় বা কোনোরকম আদায় করে নেবার মতো বিষয়ও নয়। এটি আদায় করতে হবে পাঁই পাঁই করে, যথার্থভাবে। জাকাত এবং ফিতরা শরীয়ত নির্ধারিত দান সংক্রান্ত একটি বিষয়। যাদের উপর তা ফরজ হবে তাদের এটি অবশ্যই আদায় করতে হবে। আর এর বাইরে যে দান করা হয় সেগুলো ঐচ্ছিক। তবে সেসব দানকেও ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে।
নবী সা. নিজেই এর ব্যাপক চার্চা করতেন। কাজেই তাঁর উম্মত হিসেবে মুসলমানদের এর চর্চা বেশি করে করা উচিত। আমাদের সম্পদ নিয়ন্ত্রণ হোক দুনিয়া কেন্দ্রিক না হয়ে আখিরাত কেন্দ্রিক। তবেই সে সম্পদ আমাদের হাশরের দিনে কাজে আসবে। কাজে আসবে কবরের কঠিন দিনগুলোতে।