যৌতুক একটি সামাজিক অভিশাপ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৩০:২৪ অপরাহ্ন
যৌতুক এখনো এদেশে একটি বড়ো সামাজিক সমস্যা। যৌতুকের কারণে সংসার ভেঙ্গে যাওয়া এমনকি নির্মম হত্যাকা-ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এদেশের নারী সমাজের দুঃখ ও দুর্দশার জন্য যৌতুক একটি বড়ো ফ্যাক্টর হয়ে আছে। যৌতুকের কারণে যেমন বিয়ে ভাঙ্গছে তেমনি যৌতুক প্রদান করতে না পারায় অনেক নারীর বিয়ে হচ্ছে না। এদেশে নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী কঠোর আইন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতসমূহে এ সংক্রান্ত প্রচুর মামলা বিচারাধীন রয়েছে। প্রায় প্রতিদিন এ ধরণের মামলার বিচার হচ্ছে এবং নতুন নতুন মামলা দায়ের হচ্ছে। যৌতুক গ্রহণ এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতন নিপীড়ন ও হত্যা মারাত্মক অপরাধ হলেও তা অন্যান্য অপরাধের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন ধরণের।
এর কারণ এটা পরিবারকেন্দ্রিক অর্থাৎ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাধারণতঃ সংঘটিত হয়। যৌতুক সংক্রান্ত বিরোধ ও অপরাধ পরিবারকেন্দ্রিক হওয়ায় বাইরের লোকজন এর প্রতিকারে তেমন সহায়তা কিংবা হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। এসব ক্ষেত্রে নির্যাতনকারী পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা আমাদের ব্যক্তিগত ও ফ্যামিলির বিষয়, এতে কারোর হস্তক্ষেপ আমরা সহ্য করবো না। অনেক ক্ষেত্রে উটকো ঝামেলার ভয়ে র্যাব-পুলিশ ও এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে মান সম্মান বিনষ্টের ভয়ে অনেক গৃহবধু বিষয়টি প্রকাশ করতে চায় না কিংবা প্রতিকার প্রার্থী হয় না। এতে নির্যাতন ও নিপীড়নকারীদের সুবিধা। গৃহের অভ্যন্তরে নির্বিঘ্নে চলতে থাকে অমানবিক ও অমানুষিক নির্যাতন নিপীড়ন এমনকি হত্যাকান্ড।
সমাজ থেকে যৌতুক নামক অভিশাপ দুর করতে হলে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা সৃষ্টি প্রয়োজন। প্রয়োজন ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের উজ্জীবন এবং এ সংক্রান্ত শিক্ষা প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণ। যৌতুক গ্রহণ যে একটি মারাত্মক অপরাধ এবং এটা বুমেরাং হয়ে নিজের দিকেই ফিরে আসে, সমাজের সকল স্তরের মানুষের মাঝে এই বোধ ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই সমাজ থেকে যৌতুকের মতো ঘৃণ্য অভিশাপ ধীরে ধীরে দূর হবে। আমরা এ ব্যাপারে সংশি¬ষ্ট সকলের সচেতনতা ও সক্রিয় উদ্যোগ কামনা করি।