আমরা কি কারো কাছে বন্দী?
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০:১৪ অপরাহ্ন
প্রকৃত দেশপ্রেমিকের মতো কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। তার এই বক্তব্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এই জাহাজটা মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসেছে। সেখান থেকে এসে একটা দেশে গেছে, সেখান থেকে আমাদের দেশে এসেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমাদের দেশে জাহাজ আসা নিষিদ্ধ আছে?’ আমরা কি কারো কাছে বন্দী যে শুধু তাকেই সেবা করবো? আমার দেশ সবার ওপরে। খেজুর, পেঁয়াজ, আলু এগুলো সামনের রোজার সময় দরকার। এগুলো কি আমরা আসতে দিব না? যারা এগুলো রটাচ্ছে তারা আমাদের শত্রু।’
কিছুদিন আগে পাকিস্তান থেকে সরাসরি একটি বাণিজ্যিক জাহাজ বাংলাদেশে আসার পর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও তার এদেশীয় দোসর এজেন্টরা রীতিমতো হৈ চৈ শুরু করেছে। ভারতের মিডিয়া এমনকি টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা এবং আনন্দ বাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকাও পাকিস্তানী বাণিজ্যিক জাহাজের বাংলাদেশে আসাকে কেন্দ্র করে গুজবের ঢল নামিয়েছে। আর এর কোন প্রতিবাদও করছে না বা দ্বিমতও পোষণ করছে না ভারত সরকার। এর অর্থ হচ্ছে এ ব্যাপারে ভারত সরকারের মৌন সম্মতি আছে।
ভারতীয় মিডিয়ার দাবি, পাকিস্তানী জাহাজ যদি সরাসরি বাংলাদেশে আসে তবে জাহাজ ভর্তি করে অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে আসবে। এতে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি ও হুমকি সৃষ্টি হবে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে কোন দেশের জাহাজ বা বিমান আসবে কিংবা কোন দেশ থেকে কী আমদানী করবে, এটা তার নিজস্ব অধিকার। এজন্য সে কারো কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়। একইভাবে ভারত যদি রাশিয়া বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাহাজ ভর্তি অস্ত্রশস্ত্র কিংবা যুদ্ধবিমান কিনে এজন্য পাকিস্তান বা বাংলাদেশের আপত্তির কোন সুযোগ নেই। আর আপত্তি করলেও ভারত তা মানতে বাধ্য নয়। যদি পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ ভারতের কোন অঙ্গরাজ্য বা করদ রাজ্য হতো, তবে সে এ ধরনের আপত্তি কিংবা অধিকার খাটাতে পারতো। সত্যি বলতে কি, স্বৈরশাসক ভারত তোষণকারী হাসিনার অবৈধ শাসনামলে বাংলাদেশ অনেকটাই ভারতের অঙ্গরাজ্য বা করদরাজ্য কিংবা কলোনীর (উপনিবেশের) মতো ছিলো। তার নিকৃষ্ট ও জঘন্য নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সে ভারতের কথা মতো চলতো। তাবেদারী করতো। আর এর বিনিময়ে ভারত তাকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতো।
কিন্তু সেই দিন এখন বিগত, অতীত হয়ে গেছে। এখন এদেশের জনগণও তাদের সরকারই ঠিক করছে কোন দেশের সাথে সে বাণিজ্য করবে, কোন দেশের বাণিজ্য জাহাজ এদেশের বন্দরে আসবে। এতে শুরু হয়েছে ভারতের গাত্রদাহ। আর এই গাত্রদাহ থেকে ভারতীয় মিডিয়ার ‘মাথার ঘায়ে কুত্তা পাগল’ দশা। মাথা খারাপের মতো বক্তব্য রাখছে এমনকি হুমকি ধামকি দিচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশকে। এর কঠিন জবাব দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যা বিগত শুধু সাড়ে ১৫ বছর নয়, ৫৩ বছরেও এমন কড়া জবাব কোন সরকার দিতে পারেনি ভারতকে। শুধু একজন দেশপ্রেমিক আত্মমর্যাদাশীল নেতৃত্বের পক্ষেই এটা সম্ভব। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য ও অবস্থানকে স্বাগত ও সমর্থন জানাচ্ছি এদেশের জনগণের পক্ষ থেকে।