গোলাপগঞ্জে আনারস বাগানে পর্যটকদের ভীড়
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ৯:০৭:১৭ অপরাহ্ন
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি: গোলাপগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভীড় করছেন। বিশেষ করে আনারস বাগানগুলোতে ঈদের পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। প্রতিদিনই যেন দর্শক আর পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় দর্শনার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দেশী বিদেশী পর্যটক।
দেশের উপজেলা পর্যায়ের প্রথম সারীর একটি জনপদ হচ্ছে গোলাপগঞ্জ। প্রবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলায় প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ প্রবাস থেকে দেশে আসেন। ইউরোপ আমেরিকায় বসবাসরতদের অনেকেই এসময় পরিবার পরিজন নিয়ে দেশে এসে ঈদ উদযাপন করেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেশী সংখ্যক প্রবাসী দেশের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে দেশে এসেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সিলেটের গোলাপগঞ্জ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ছোট বড় হাজারো টিলা আর পাহাড় থাকার পরও এত দিন এখানে কোন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। বিগত ৫ বছর পূর্বে কৃষিভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে। এতে ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামে ৫০ একর ছোট বড় টিলা নিয়ে মরহুম চাঁন মিয়া চেয়ারম্যানের পরিবার গড়ে তুলেন আনারস বাগান। তারা বাগান করার পর দর্শনার্থীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেলে পর্যটকদের জন্য এখানে বিভিন্ন কাজ করতে থাকেন। পর্যটকরা টিলার উপরিভাগে উঠতে রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিলে এখানকার রূপ সৌন্দর্য দেখতে দ্রুত দর্শনার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে সিলেটের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে গোলাপগঞ্জের আনারস বাগানও যুক্ত হয়। বর্তমানে এই বাগান ছাড়াও পার্শ্ববর্তী লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নে পাহাড় লাইনে আলভিনা গার্ডেন নামে আরো একটি আনারস বাগান গড়ে উঠেছে। বাগানগুলোতে আনারসের পাশাপাশি নানা জাতের লেবু, কমলা ও মাল্টার চাষ করা হয়েছে। বাগানের উঁচু টিলার উপর উঠলে দেখা যায় সবুজ শ্যামলীমার অপূর্ব সৌন্দর্য। আর এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি সিলেটের বিভিন্ন জেলার লোকজন এখানে আগমন করে থাকেন। এখানে পর্যটকদের বিশেষ আর্কষন হচ্ছে নিজ হাতে বাগান থেকে আনারস সংগ্রহ। সেই সাথে তাজা রসে ভরা আনারসের জুস খাওয়ার জন্য মালিকপক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাগানের মালিকরা একদিকে আনারস ও আনারসের জুস বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছেন, অন্যদিকে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রবেশ ফির মাধ্যমে বারো মাসই আয় করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মাশরেফুল আলম এক বক্তব্যে বলেন, গোলাপগঞ্জের টিলাবেষ্টিত এলাকাগুলো পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই উপযোগী। বিশেষ করে কৃষি পর্যটনের জন্যে সম্ভাবনাময় এলাকা। কৃষি পর্যটন শিল্পের বিকাশে গোলাপগঞ্জের টিলাগুলো নিয়ে কৃষি বিভাগের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানালেন।