এমসি হোস্টেলে গণধর্ষণ : সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু, ১ম দিনে অনুপস্থিত বাদী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মে ২০২৫, ১০:০৮:২৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কর্তৃক বহুল আলোচিত এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধুকে গণধর্ষণ মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) ট্রাইব্যুনালে মামলাটির প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১৯ মে পরবর্তী স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য করা হয়েছে। তবে ১ম দিনে মামলার বাদী ও ঘটনার শিকার তরুণী সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হননি। মামলায় শুধু হৃদয় পারভেজ নামে একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যদানকারী হৃদয় পারভেজ ঘটনার সময় কলেজ ছাত্রাবাসের ২০৫নং কক্ষে অবস্থান করতেন। বর্তমানে পড়াশোনা শেষ করায় তিনি ছাত্রাবাস ছেড়েছেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) এডভোকেট মো. আবুল হোসেন।
তিনি বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার ৩ জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। তবে বাদী ও ভুক্তভোগী তরুণী আদালতে আসেননি। পারভেজ নামের এক সাক্ষি আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ১৯ মে নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে মামলার সাক্ষি অনুপস্থিত থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ ও শাহপরান থানার ওসিকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
শাহপরান থানার ওসি মনির হোসেন জানান, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় বাদীর বাসায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারপরও তিনি ও অভিযুক্ত তরুণী আদালতে উপস্থিত হননি।
এর আগে, মামলাটি সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ছিল। কিন্তু দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পরবর্তীতে মামলাটিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে একটি কক্ষে আটকে রেখে তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন তার স্বামী বাদী হয়ে আটজনকে আসামী করে শাহপরান থানায় একটি মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর আদালতে ঘটনার দায়ও স্বীকার করেন আসামিরা। এছাড়া ডিএনএ টেস্টেও ৮জনের মধ্যে ৬জনের সঙ্গে ধর্ষণের আলামতের মিল পাওয়া যায়। পরে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহপরান থানার তৎকালিন ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য ৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বর্তমানে তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে বড় অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসামীদের সাথে বাদী আপস করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। মামলা পরিচালনায় নিয়োজিত মানবাধিকার সংগঠন ও আইনজীবীগণও একাধিকবার বিচার কাজে বাদীর অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। স্বাক্ষ্যগ্রহণের ১ম দিনে বাদী ও ভিক্টিমের অনুপস্থিতি এই অভিযোগের সত্যতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।