অভিনন্দন শ্রীলংকা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩০:৪৬ অপরাহ্ন
সুশাসন ও সদিচ্ছা থাকলে একটি দেশ যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে কোন বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠতে পারে এর জ্বলন্ত উদাহরণ বর্তমান শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান। শুধু সুশাসন ও সুুষ্ঠু অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেউলিয়াত্ব থেকে ফিরে এসেছে শ্রীলংকা। আর দীর্ঘদিনের যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে দৃঢ় ভিত্তির ওপর স্থাপন করছে আফগানিস্তানের দৃঢ়চেতা শাসকগোষ্ঠী। প্রতিষ্ঠিত করছে সুষ্ঠু ও সুশৃংখল শাসন ব্যবস্থা।
জানা গেছে, শ্রীলংকার বর্তমান সরকার নিজ দেশের জনগণের অর্থনৈতিক সংকট বহুলাংশে কাটিয়ে ওঠেছে ইতোমধ্যে। দেউলিয়া হয়ে পড়া অর্থনীতি এখন দ্রুত চাঙ্গা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। কমছে দারিদ্র্য ও অভাব অনটন। বৈদেশিক আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি অভ্যন্তরীন আয়-উৎপাদনও বাড়ছে। এ অবস্থায় শ্রীলংকা বাংলাদেশ থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, শ্রীলংকাকে দেয়া ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে আরো ১০ কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। সুদ হিসেবে পেয়েছে আরো ২৮ লাখ ডলার। গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গত ২১ আগস্ট ঋণের প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ শ্রীলংকার কাছ থেকে ৫ কোটি ডলার ফেরত পায়। উল্লেখ্য, কারেন্সী সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে ৪ কিস্তিতে শ্রীলংকাকে এক বছর মেয়াদী ঋণ দেয় বাংলাদেশ। ঋণের পরিমাণ ছিলো ২০ কোটি ডলার। আরো ৫ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ শ্রীলংকার কাছ থেকে।
অপরদিকে এশিয়ার অপর একটি দেশ আফগানিস্তনের অর্থনীতিকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে রূপকথার ফিলিপ পাখির মতো জীবন্ত হয়ে ওঠতে দেখা যাচ্ছে। গত এক বছরে আফগানিস্তান আর্থিক সংকট অনেকটাই কাটিয়ে ওঠতে সক্ষম হয়েছে সুশাসন ও প্রশাসনিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিলো ১৮.৩ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩ সালের মার্চে তা নেমে আসে ১.৯৪ শতাংশে। গত ৩/৪ মাসে এ অবস্থার আরো উন্নতি হয়েছে। এ এক বিস্ময়কর সাফল্য। এছাড়া দেশটি ২০২২ সালে ২৯০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে যা ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণেরও বেশী। দেশটির রাজস্ব সংগ্রহও শক্তিশালী হয়েছে। সরকারী কর্মচারীরা বেতনও পাচ্ছেন আগের তুলনায় নিয়মিতভাবে।
এসবই তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য শিক্ষনীয় বিষয়। শুধু সুশাসন এবং দুর্নীতি ও বিশৃংখলা দুরীকরণের মাধ্যমে একটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে উন্নতির পথে ও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বর্তমান শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান। বলা বাহুল্য, দেশটি দুটি সরকারী পর্যায়ে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ নেই বললেই চলে। আমরা দেশ দুটির দেশপ্রেমিক সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। স্যালুট শ্রীলংকা, স্যালুট আফগানিস্তান।