ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ওবামার সাহসী বক্তব্য
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩০:১৩ অপরাহ্ন
ইসরাইল ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক ও বৈষম্যমূলক নীতি ফিলিস্তিনী জনগণ ছাড়াও গোটা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে তীব্রভাবে সমালোচিত এমনকি ঘৃণিত হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে ইসরাইল সফরে গিয়ে ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীসভার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে বাইডেন বলেন, তিনি একজন জায়নবাদী অর্থাৎ ইহুদীবাদী। অথচ ইহুদীবাদ যতোটা না ধর্মীয় তার চেয়েও বেশী উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদী ধ্যান ধারণার সাথে সম্পৃক্ত। তাই অনেক ইহুদীও জায়নবাদকে অপছন্দ এমনকি ঘৃণা করেন।
অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিঃসঙ্কোচে নিজেকে জায়নবাদী বলে ইহুদীবাদী ইসরাইলী শাসকগোষ্ঠীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এদিকে এর উল্টো সুর শোনা গেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কণ্ঠে। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি ইসরাইলীদের যথেষ্ট সমর্থন ও সহায়তা প্রদান করেন। হয়তো দেশটির ইসরাইল নীতির কারণে। কিন্তু সাবেক হওয়ার পর এখন তিনি সঠিক ও মানবিক পথে ফিরে এসেছেন বলে তার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে।
সম্প্রতি বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে বলেছেন, এমনকি আমরা যদি ইসরাইলকে সমর্থনও করি, এরপরও হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইল এই লড়াই কিভাবে সম্পন্ন করবে, সে ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই সংঘাতকে চলতে দেওয়ার মানে ফিলিস্তিনীদের দুর্দশাকে উপেক্ষা করা। গাজা হোক বা পশ্চিম তীর হোক, সেটা অন্যায্য।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের সময় তাদের অনেকে কেবল বাস্তুচ্যুতই হয়নি, দিনের পর দিন জোরপূর্বক তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এমন কর্মকান্ডেও ইসরাইল সরকারের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিলো।
লক্ষণীয় যে, বারাক ওবামা নিজেকে খৃস্টান বলে দাবি করলেও এবং সবাই তাকে ধৃষ্ট ধর্মাবলম্বী বলে জানলেও তার রক্তে বইছে মুসলিম পূর্বপুরুষের রক্ত। তাই মাঝে মাঝে সেই ঈমানী রক্তের চেতনা বা কণিকা জেগে ওঠে মুসলিম নিপীড়নে। হয়তো তার নিজের অলক্ষ্যেই তাকে ক্ষুব্ধ করে মুসলিম জাতির দুঃখ দুর্দশা। কিছুদিন আগে ভারতের উগ্রবাদী ও মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি’র নেতা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলে বারাক ওবামা একটি কড়া বিবৃতি দেন। তার বিবৃতির মূল কথাটি হচ্ছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ সংখ্যালঘু জনগণের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার না করেন, তবে ভারত ভেঙ্গে কয়েক টুকরো হয়ে যাবে। এতে বেজায় ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায় বিজেপির শাসকগোষ্ঠীকে। প্রকৃতপক্ষে বারাক ওবামা একজন অসাধারণ জ্ঞানী ব্যক্তি ও খ্যাতিমান লেখক। ‘ওডাসিটি অব হোপ’ (আশার স্পর্ধা) তার বিখ্যাত গ্রন্থ। এছাড়া আরো বেশ কিছু বই তিনি লিখেছেন যেগুলোতে তার রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রজ্ঞার ব্যাপকতা ও গভীরতা প্রকাশিত হয়েছে। আমরা ইহুদীবাদীদের বিশেষ প্রভাবাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার শাসকগোষ্ঠীর মাঝে ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব বারাক ওবামার ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ন্যায়নিষ্ঠ ও মানবিক অবস্থানকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানাচ্ছি।