টান টান উত্তেজনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩০:৫০ অপরাহ্ন
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন খুবই উত্তপ্ত। বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর আগামী শুক্রবারের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে এখন তীব্র উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিরোধী দল যে কোন মূল্যে এই কর্মসূচি সফল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অপরদিকে ক্ষমতাসীন দল তথা সরকার এটাকে প- বা দুর্বল করতে বদ্ধপরিকর। তাই উভয় পক্ষই মরিয়া হয়ে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিরোধী দলের লাখো নেতা কর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছেন। এই জন¯্রােত এখনো অব্যাহত। পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো চেষ্টা করছে এই জন¯্রােত প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কৌশলে। এজন্য তারা হানা দিচ্ছে বিভিন্ন হোটেল, কমিউনিটি সেন্টার এমনকি বাসা বাড়িতে। চালাচ্ছে ধড়পাকড়, ষড়যন্ত্র, ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা ও নাশকতার চক্রান্তের অভিযোগ এনে। কিংবা আগে দায়ের করা মামলার আসামী হিসেবে দায়ী করে। তবে এসব তৎপরতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশগুলো। তা সত্বেও ক্ষমতাসীন মহল একটা উপলক্ষ খুঁজছে বিরোধী দলকে ঘায়েল করার জন্য। নৈরাজ্য, বিশৃংখলা, নাশকতা, ও সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে তাদের ওপর একটি বড়ো ক্র্যাকডাউনের সুযোগ খুঁজছে সরকারী পক্ষ। অনেক নেতাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। চেষ্টা চলছে শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের। এ অবস্থায় বিএনপি কৌশলী ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে সরকারের পাতানো কোন ফাঁদে পা না দিতে। আবার আন্দোলন তথা সমাবেশ যাতে সফল হয়, সেই চেষ্টাও সর্বাত্মকভাবে করছে তারা।
উভয় পক্ষই এখন পয়েন্ট অব নো রিটার্ণে এসে পৌঁছেছে। কোন পক্ষেরই পেছানোর সুযোগ নেই। যে পেছাবে সেই সীমাহীন জটিলতা ও দুর্ভোগের মধ্যে নিপতিত হবে। বলা যায়, তারা এখন রাজনৈতিক মরণপণ লড়াইয়ে অবতীর্ণ।
অবশ্য আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল চেষ্টা করে আসছে, সরকারী ও বিরোধী দলের মধ্যে একটি সংলাপ ও সমঝোতার। এখনো সে চেষ্টা যে থেমে গেছে এমন নয়। আর রাজনীতিতে যেহেতু শেষ কথা বলতে কিছু নেই, এবং সকল সমস্যারই একটা না একটা সমাধান আছে, এমন চিন্তা ভাবনাও বিশ্বাস থেকে সচেতন মহল সংঘাত এড়িয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। তবে সত্যি কথাটি হচ্ছে, এই সংঘাত ও বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক পন্থায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা কম। আর এটাই মূলত: শংকার বিষয় দেশবাসীসহ সকল হিতকামী মহলের।
বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। এ অবস্থায় দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা, সংঘাত, হরতাল অবরোধ এ অবস্থাকে চরম খারাপের দিকে ঠেলে দিতে পারে। যার ফলে এক ধরনের দুর্ভিক্ষাবস্থা সৃষ্টি হওয়াও অসম্ভব নয়। আমরা এমন পরিস্থিতি এড়াতে আগে ভাগেই সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সরকার ও বিরোধী দল উভয় পক্ষের দৃষ্টি ও মনোযোগ আকর্ষণ করছি। প্রত্যাশা করছি বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান। আর এটাই দেশের আপামর জনগণের প্রত্যাশা।