জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ মর্যাদাবান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান তথা বিপ্লবের অন্যতম লড়াকু সৈনিক ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘৭১ এর পর রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম, কিন্তু এবার নয়। তিনি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবকে কিছু জঙ্গী, হিন্দুবিরোধী এবং ইসলামপন্থীদের ক্ষমতা দখল হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতের উচিত বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা এবং দ্ব্যর্থহীন বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান এবং ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া। এটি দিয়েই শুরু করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে নতুন বাংলাদেশের ভিত রচনা করা হলে তা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য হবে ক্ষতিকর। তিনি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিলো একটি গণতান্ত্রিক, প্রজন্মভিত্তিক ও দায়িত্বশীল সংগ্রাম। আর এই সংগ্রাম চলবে দীর্ঘ সময় ধরে। বাংলাদেশী জনগণ আগের মতো নেই, তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও মর্যাদাবান। তারা মরার আগ পর্যন্ত তাদের মর্যাদার জন্য লড়াই করবে।
তিনি বলেন, বাংলার এই অংশে ভারতপ্রেমী বা ভারতীয় মিত্ররা ভাবছে যে, পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাবে এবং জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদীদের নৃশংসতাকে এড়িয়ে গেলে তাদের কিছুই হবে না। এটা একটা ভুল ধারণা। মানুষ সব দেখছে। তিনি আরো বলেন, ‘দিল্লী না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা’ এবং ‘স্বদেশ না শাহাদাত’ এই শ্লোগানগুলো বাংলাদেশকে একক অঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এদেশের প্রতিটি কোনে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ভারত যেনো এই ঐক্যবদ্ধ, মর্যাদাবান ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তা শত্রুতে পরিণত না করে। অনন্য ও অসাধারণ এই অনুভূতি। এ যেনো বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের ধ্যান ধারণার প্রতিফলন এবং আশা আকাংখার প্রতিফলন।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রতিবেশী দেশ ভারত যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে যেনো ভারত সরকারের পতন বা পরাজয় ঘটেছে। একটি আগ্রাসী দেশের দুর্বৃত্ত সরকারের পক্ষেই এ ধরনের আচরণ মানানসই। বিশ্বের কোন সুস্থ বুদ্ধির গণতান্ত্রিক সরকারের কুশিলবদের এমনটি করার কথা চিন্তাও করা যায় না। কিন্তু এক সময়ের বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারতের বর্তমান মোদী সরকার তথা বিজেপি সরকারকে এখন বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো ও মিথ্যা প্রচারণার যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে দেখা যাচ্ছে। তাদের এমন আচরণে খোদ ভারতেরই গণতন্ত্রপন্থী বিবেকবান মানুষেরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ। প্রধানমন্ত্রী মোদীর পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচনা করছেন তারা।
বর্তমানে শুধুমাত্র হিংসাত্মক স্বার্থান্বেষী ও বিদ্বেষমূলক আচরণের কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ। শুধু প্রতিবেশী নয় এ অঞ্চলের আফগানিস্তানসহ আরো বহু দেশ তাদের ওপর থেকে আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। যুুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি ও কানাডার মতো প্রভাবশালী দেশও এখন ভারতকে পছন্দ করে না। আর এসবের জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার দল বিজেপি। মাহফুজ আলম অত্যন্ত চমৎকারভাবে ভারতকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান, ধ্যান ধারণা ও মিশন-ভিশনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ভারত যেনো তাদের সেবাদাসী হাসিনার শাসনামলের বাংলাদেশকে বর্তমান বিপ্লবী চেতনার বাংলাদেশের সাথে গুলিয়ে না ফেলে। মাহফুজ আলমের কথা এদেশের ১৮-২০ কোটি মানুষের কথা। আমাদেরও কথা। এদেশের জনগণ আশা করে ভারত যেনো বাংলাদেশের সাথে সমতা, সম্মান ও মর্যাদাভিত্তিক আচরণ করে।