মেধাবী সৌরভ কর্মকারের সাফল্য
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০:১৭ অপরাহ্ন
গতকাল মিডিয়ায় ‘ইমেইলিং সার্টিফিকেশন সিস্টেম ডেভেলপ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সৌরভ কর্মকার নামক এক শিক্ষার্থীর এক প্রশংসনীয় সাফল্য ও শিক্ষার্থীদের সনদ তুলতে ভোগান্তি লাঘবের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সনদ উত্তোলনের দুর্ভোগ কমাতে দিন দু’য়েক আগে ‘ই-মেইলিং সার্টিফিকেশন সার্ভিস’ চালু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে সহজেই শিক্ষার্থীরা নিজেদের একাডেমিক সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত সনদ তুলতে পারবেন জরুরীভাবে তিনদিনের মধ্যেও। এই পদ্ধতির উন্নয়ন বা সিস্টেমটির ডেভেলপার অর্থাৎ উন্নয়নকারী হচ্ছেন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ কর্মকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইলিং সার্টিফিকেশন সিস্টেম ডেভেলাপ নিয়ে সিএসই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ সানাউল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা সৌরভ এটি ডেভেলাপ করেছে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একটি সিস্টেম ডেভেলাপ করতে পারায় আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত আছি।’ নিঃসন্দেহে অত্যন্ত প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ। এ প্রসঙ্গে সৌরভের বক্তব্য হচ্ছে, ‘আমার লক্ষ্য অটোমেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা আরো সহজ ও সময়োপযোগী করে তোলা। আমি চাই, পরীক্ষার ফরম পূরণসহ সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোক। আমাদের বিভাগের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও প্রশাসনের সহযোগিতা একত্রে কাজ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অটোমেশন ব্যবস্থা একটি নতুনর দিগন্তে পৌঁছবে। প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে শিক্ষাক্ষেত্রে এমন উদ্ভাবনী পরিবর্তন সময়ের দাবি।
এই হলো মেধার ফল। অথচ গত দেড় দশকব্যাপী এ ধরনের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটানোর তেমন কোন সুযোগ দেয়া হয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থেকে শুরু করে চাকরীর সকল ক্ষেত্রে কোটার মাধ্যমে অযোগ্য ও অদক্ষ ও অথর্বদের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এতে গোটা জাতি অর্ধশতাব্দি পিছিয়ে গেছে। এখন অন্যায় অবিচার ও অসংগতি-অপরাধমুক্ত নতুন পরিবেশে এদেশের শিক্ষার্থী তরুণ সমাজ তাদের মেধার বিকাশ ও তা কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে, এমন প্রত্যাশা সচেতন মহলসহ গোটা দেশবাসীর। বলতে দ্বিধা নেই, এখন যদি স্বৈরাচারী হাসিনার মদদপুষ্ট আইসিটি মন্ত্রী ও লাঠিয়াল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের আধিপত্য থাকতো, তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর এই উদ্ভাবন ও উদ্যোগ হয়তো সম্ভব হতো না। কারণ ডিজিটাল ইনফরমেশন টেকনোলজী ইত্যাদি খাতে উন্নয়নের নামে তারা হাজার কোটি টাকা লোপাট ও আত্মসাত করেছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় মিডিয়ায় ‘ডিজিটালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়, তবু সূচকে পিছিয়ে বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে সাড়ে ১৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তবু ডিজিটাল সেবা, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্নীতি কমানো, মানব সম্পদ ও দক্ষতা উন্নয়ন, আইসিটি সেবা, রপ্তানীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১৫ বছরে আইসিটি খাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দলীয় কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উন্নতি হয়েছে। যা-ই হোক, এই হতাশার মধ্যে মেধাবী শিক্ষার্থী সৌরভ কর্মকারের উপরোক্ত উদ্ভাবনের বিষয়টি এদেশের আইটি খাতের জন্য শুভ সংবাদ। আমরা তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।