স্বর্ণালী গন্তব্যের লক্ষ্যে দেশ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:১০:৩১ অপরাহ্ন
গতকাল মিডিয়ায় ‘তবে কি ভাগ্য বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের? হবে অন্যতম ধনী দেশ!’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ নিয়ে একটি অত্যন্ত আশাপ্রদ ইতিবাচক কিছু বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশে^র মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ হলেও এর সম্ভাবনা বিশাল। দেশের বিস্তৃত সমুদ্রসীমা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এক বিশাল সুযোগ এনে দিতে পারে। যদি বাংলাদেশ যথাযথভাবে এই সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারে, তাহলে এটি এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হতে পারে এবং দেশের অর্থনীতির চিত্র বদলে যেতে পারে। দেশটির সমুদ্রসীমার গুরুত্ব ও সম্ভাবনা নিয়ে বলা হয়েছে, দেশের বিস্তৃত সমুদ্রসীমা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার, যার মধ্যে রয়েছে ২শ’ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত মহীসোপান। এই বিশাল পানি সীমা সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করা সম্ভব। বাংলাদেশ সমুদ্রসীমার অধিকারী দেশ হওয়ায় এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিপিং শিল্পে প্রবেশের অপার সুযোগ পেয়েছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ তাদের একটি সমুদ্র রয়েছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। ব্যবসার সঠিক পরিকল্পনা করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভাগ্য বদলে যাবে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমেদ আধুনিক করে গড়ে তোলা হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠবে। এছাড়া গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বাংলাদেশ ‘ট্রান্সশীপমেন্ট হাব’ হিসেবে বৈশি^ক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। শুধু সমুদ্রপথের উন্নয়নই নয়, বাংলাদেশ তার নিজস্ব শিপিং শিল্পকে আরো সম্প্রসারিত করতে পারে। আন্তর্জাতিক কন্টেইনার জাহাজ পরিচালনার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড়ো সুযোগ তৈরী হবে। এছাড়া মৎস্য ও জ¦ালানী সম্পদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমায় প্রচুর মৎস্য সম্পদ রয়েছে। যদি আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বৃদ্ধি করা যায়, তবে মাছ রপ্তানী বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হতে পারে।
এছাড়া বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন ও অন্যান্য উপকূলীয় এলাকা এবং রাঙামাযিট, সিলেটসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত অঞ্চলের দর্শনীয় পর্যটন স্থলগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য আরো উন্নত করা হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। সচেতন মহলের মতে, দেশের সমুদ্রসীমাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সরকারী বেসরকারী উদ্যোগের সমন্বয়।
বিগত স্বৈরাচারী সরকার সমুদ্রসীমা তথা সমুদ্র বন্দরকে কাজে লাগানোর পরিবর্তে সেগুলো বিনামূল্যে প্রতিবেশী ভারতের কাছে ইজারা দিয়েছিলো। এতে বাংলাদেশ আর্থিক দিক দিয়ে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি দেশের সার্বভৌমত্ব হয়ে পড়ে হুমকির সম্মুখীন। সামুদ্রিক সম্পদ যথাযথভাবে আহরণের কোন উদ্যোগও নেয়নি হাসিনা সরকার। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। ডঃ ইউনুসের সরকার দেশকে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার মতো উন্নত ও বিত্তশালী দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু এতেও বাধ সাধছে পতিত স্বৈরাচারের দোসর এবং তাদের গডফাদার দেশ ভারত। তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র এবং ভারতের উপনিবেশ করার দুরভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্র নিয়ে সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছে। তবে দেশপ্রেমিক জনগণ এখন সজাগ। তাদের এই চক্রান্ত যে কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না এদেশের জনগণ, এতে কোন সন্দেহ নেই।