ঈদ আনন্দ: শৈশবের উচ্ছ্বাস বনাম তারুণ্যের উপলব্ধি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন
সামিহা তাসনিম ::
ঈদ ভাবনার কথা বললেই শৈশবের ঈদ আনন্দের স্মৃতিগুলোর মত স্নিগ্ধ ও সুন্দর বোধহয় আর কিছুই হয় না। উদযাপন যেন আগের রাত থেকেই শুরু হয়ে যেত, চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে, ঈদকার্ড বিনিময় মেয়েদের মেহেদী রাঙ্গানোর উৎসব, মায়েদের ঈদ উপলক্ষে বিশেষ খাবারের আয়োজনের প্রস্তুতিসহ নতুন জামা নিয়ে আগ্রহ ও হাসি-উল্লাসের আড্ডায় অনেকটা ঘুমহীন রাতই কাটত সকলের। বাবার হাত ধরে ঈদের নামাজে যাওয়া ও সবার কুশল বিনিময় করে কোলাকুলি করার এক প্রীতিকর অনুভূতি দিয়েই শুরু হত এই আনন্দময় দিনের।
বড়দের শ্রদ্ধায় ও ছোটদের স্নেহময়ে সালামি দেয়া নেয়া যেন পরিবারের সবচেয়ে সুন্দরতম মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি। সেই ঈদ আনন্দের অনুভূতি হয়ত আমরা অনেকেই হারিয়ে ফেলেছি জীবনের নানা ব্যস্ততার ফাঁদে। তবে এই অনুভূতিকে ফিরে পাওয়া সম্ভব। শৈশবে বাবা মা যেভাবে বিশেষ উপহার দিয়ে ঈদকে বিশেষ করে তুলতেন সেভাবেই তাদের উপহার দিয়ে কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করার মাধ্যমে বা ছোটদের সালামি, উপহার দিয়ে তাদের দিনকে বিশেষ করানো কিংবা ঈদের দিন সকলের জন্য বিশেষ কিছু খাবার তৈরি করে দেয়াসহ সবাইকে নিয়ে ঘুড়তে যাওয়া ও সময় কাটানো সেই অনুভূতিকে ফিরিয়ে দিতে পারে। বড় হওয়ার সাথে সাথে ঈদ আনন্দ অনুভূতির কিছুটা পরিবর্তন আসে বটে তুবে হারিয়ে যায়না।
সকলের ঈদে সুন্দর স্মৃতি উপহার দেয়ার প্রয়াসই যেন আমাদের শৈশবের ঈদের আনন্দকে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়। বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুভূতি, পুরো পরিবারের সাথে থাকতে পারার স্বস্তি এক ধরনের উৎসবমুখোরতা দিলেও পরিবারের সদস্যদের সঠিক মূল্যায়ন ও একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা-মমতা যেন ঈদের আনন্দকে দ্বিগুন করে দেয়। সর্বোপরি আমাদের এই দিনের বিশেষ আমেজে যেন বাদ না পরে যায় অসহায় ও খেটেখাওয়া মানুষরা। পথশিশু, এতিম কিংবা পরিবারহারা মানুষদের সাথে খুশী ভাগ করে নেয়ার পাশাপাশি বাসার দারোয়ান থেকে শুরু করে কাজে সাহায্য করা প্রতিটা মানুষকে সাথে নিয়ে উদযাপনই প্রকৃতপক্ষে ঈদ আনন্দের পরিপূর্ণতা মিলাবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা