‘তবে কেনো লোক হাসালি’
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুন ২০২৫, ৮:১৯:০৩ অপরাহ্ন
গতকাল আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার ভারতের’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে ভারত। গত ৩১ মে সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা সংলাপে অংশগ্রহণের ফাঁকে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা জানান ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান। রিপোর্টে আরো বলা হয়, অবশ্য ভারত কতোটি বিমান হারিয়েছে, তার নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেনি ভারত। দেশটির সেনাপ্রধান বলেছেন, এটাই শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় যে, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে, বরং কেনো সেগুলো ভূপাতিত হয়েছে, সেটিই আসল বিষয়। অনিল চৌহান বলেন, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ৭টি ভারতীয় যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ৩টি হচ্ছে রাফাল। তাদের এই দাবি একেবারেই ভুল। অবশ্য কয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি ভারতের সেনাপ্রধান। যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাকিস্তানী দাবি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জেনারেল চৌহান বলেন, কেনো ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হলো, কী ভুল ছিলো, এটি ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথম দিনে ক্ষতির পর নতুন করে তাদের কৌশল ঠিক করে এবং দু’দিন পর আবারও অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের গভীরে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সময় পাকিস্তানের সব যুদ্ধবিমান উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের দাবি, দেশটি ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
লক্ষণীয় যে, ৭ মে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বা সংঘাত শুরুর পর থেকে ইতোমধ্যে ২১ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই একুশ দিন পাকিস্তান যুদ্ধের সুস্পষ্ট বর্ণনা দিলেও ভারত অগণিত বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেছে, যা যে কোন সাধারণ সচেতন মানুষের পক্ষে বুঝা সম্ভব। ভারতীয় মিডিয়াগুলো সাংবাদিকতার সকল নীতি নৈতিকতা ভঙ্গ করে পাক-ভারত যুদ্ধ নিয়ে বিশেষভাবে ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার বিষয় নিয়ে ডাহা মিথ্যা, বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচার করেছে। তারা ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ উল্টে ভারতের কোন ক্ষতি হয়নি বরং কোন বিমান ভূপাতিত হয়নি বলে সংবাদ প্রচার করেছে। এরা এতোই নির্লজ্জ যে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া যখন বিমান ভূপাতিত হওয়ার বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশ ও সম্প্রচার করছে এবং পাকিস্তানী ভূখন্ডে ভারতীয় বিমানের ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রকাশ করছে, তখনো তারা মিথ্যাচার করেছে। যা-ই হোক, শেষ পর্যন্ত নানা গোঁজামিল দিয়ে ও ভনিতা করে হলেও ভারতের সেনাপ্রধান অনিল চৌহান ভারতীয় জঙ্গী বিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এজন্য তাকে সাধুবাদ। তবে এসব দেখে শুনে অনেকের সেই প্রবাদটিই মনে পড়ছে, ‘যদি সেই নথ (মল) খসালি, তবে কেনো লোক হাসালি’।