দিরাই প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৫, ৯:১৪:৫৮ অপরাহ্ন
দিরাই প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দিরাই প্রেসক্লাব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক মহলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতার ঐতিহ্যের ধারক দিরাই প্রেসক্লাবের নির্বাচন ঘিরে নানা অনিয়ম, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ১১ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনটি স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন।
সকল সাংবাদিকের মাঝে সৌহার্দ্রপূর্ণ ও সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে দিরাই প্রেসক্লাবের নির্বাচনের স্থগিতাদেশ জারি করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিনিয়র সাংবাদিক রুদ্র মিজান।
সাংবাদিকদের একটি অংশের দাবি তারা ফ্যাসিবাদমুক্ত, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক প্রেসক্লাব গঠনের জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। প্রেসক্লাবের সভাপতি পদপ্রার্থী সামছুল ইসলাম সরদার এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইমরান হোসাইন নির্বাচন কমিশনের কাছে ৬ জুন একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ৩ জন প্রার্থী জিয়াউর রহমান লিটন, আবু হানিফ ও প্রশান্ত সাগর দাস-এর মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু কমিশন সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে একতরফাভাবে নির্বাচন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন। এ বিষয়ে সামছুল ইসলাম সরদার বলেন, আমরা গণতান্ত্রিকভাবে একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত প্রেসক্লাব চেয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্ব আমাদের সেই উদ্যোগকে ব্যাহত করেছে।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইমরান হোসাইন জানান, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের নিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছে। যা সাংবাদিক সমাজের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। এরপর একটি মহল বিএনপির কিছু নেতাদের নামে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে প্রেসক্লাবকে রাজনৈতিক রূপ দিতে অপচেষ্টা করলে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
জানা গেছে, ৫ জুন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জাকারিয়া হোসেন জুসেফ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর বিভিন্ন অনিয়ম ও অস্পষ্ট প্রার্থিতা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। অভিযোগ ওঠে- মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করেও প্রার্থিতা দেওয়া হয়েছে কিছু প্রার্থীকে, যার লিখিত ব্যাখা চাইলে কমিশন তা দিতে ব্যর্থ হয়। ফ্যাসিস্টদের নিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।
প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ূম বিষয়টি নিয়ে মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও কোনো সমাধান হয়নি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সংঘাত এড়াতে বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারা নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন স্থগিত করার আহ্বান জানান। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন স্থগিত করেন। এই ঘটনাকে ঘিরে দিরাইয়ে সচেতন মহল ও সাংবাদিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এবং সচেতন মহল আশা করছেন, সবপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে দিরাই প্রেসক্লাব শীঘ্রই গণতান্ত্রিক ও নিরপেক্ষ নেতৃত্ব পাবে।
এ ব্যাপারে দিরাই প্রেসক্লাবের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রুদ্র মিজান বলেন, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমরা চাই সকলের মধ্যে সৌহার্দ্র্যপূর্ণ সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় থাকুক। সবকিছু বিবেচনায় আপাতত দিরাই প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত করা হলো।