প্রতিষ্ঠিত হউক ন্যায় বিচার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩০:৪৩ অপরাহ্ন
বৈজ্ঞানিক আইজ্যাক নিউটনের একটি বিখ্যাত সূত্র হচ্ছে, প্রতিটি কার্যের একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। এটা বস্তু জগতের ক্ষেত্রে যেমন সত্য তেমনি অবস্তুগত বা আধ্যত্মিক জগতের ক্ষেত্রেও সত্য। সহজ কথায় বলা যায়, একজন মানুষ যদি একটি খারাপ করে বা কাউকে আঘাত করে তবে এই খারাপ কাজের প্রতিফল সে পাবে, আঘাত এক সময় প্রতিঘাত হয়ে তার দিকে ফিরে আসবে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে যদি বিষয়টিকে দেখা হয়, তাহলে বলা যায়, ইহজগতে কৃতকর্মের পুরস্কার বা শাস্তি প্রদানের জন্যই সৃষ্টিকর্তা পরকাল সৃষ্টি করেছেন।
বিশে^র ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, এই জগতে যারা অত্যন্ত খারাপ ব্যক্তি ছিলেন বা যারা অত্যন্ত খারাপ কাজ করেছেন, তাদের পরিণতিও তেমন খারাপ হয়েছে। আর এই খারাপ ফল পাওয়ার বিষয়টি তাদের জীবদ্দশায়ই লক্ষ্য করা গেছে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। যারা কৃতকর্মের ফল জীবদ্দশায় পাননি তাদের জন্য তা অপেক্ষা করছে পরকালে এমন ধারণা ও বিশ^াস সৃষ্টিকর্তা ও পরকালে বিশ^াসী মানুষের। এ ক্ষেত্রে অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যায়। বিশে^ অত্যাচারী ও ঘাতক হিটলার, চমেস্কু, স্ট্যালিন, সাদ্দাম, গাদ্দাফীসহ অসংখ্য স্বৈরশাসকের উদাহরণ দেয়া যায়। জীবদ্দশায়ই তাদেরকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। অপরদিকে যারা দেশ ও জনগণ এবং বিশ^বাসীর জন্য কল্যাণকর কাজ করেছেন, তারা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। জীবদ্দশায়ও তারা খ্যাতি ও সম্মান পেয়েছেন। তাদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্ম গান্ধী, কায়দে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, বিশপ দেসম- টুটু প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যায়। তাই নিউটনের সূত্র এখানে বাস্তব হতে শুরু করেছে। খারাপ বা অপকর্মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সমান ও বিপরীত শক্তি নিয়ে জেগে ওঠেছে ছাত্র-জনতা। খুন, গুম, নির্যাতন ও দুর্নীতি পাল্টা ফল ফলতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় সারা দেশে গণজাগরণ বা গণঅভ্যুত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ শুরু থেকেই শুভ বুদ্ধি ও রাজনৈতিক সততা-সদিচ্ছার পরিচয় দিলে এই বর্তমান পরিবেশ সৃষ্টি হতো না।
পরিস্থিতি এখন অনেকটা পয়েন্ট অব নো রিটার্ন বা পূর্বাবস্থায় ফিরে না আসার পর্যায়ে চলে এসেছে। তা সত্বেও দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক, এমন প্রত্যাশা এদেশের প্রতিটি মানুষের।