বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩০:২০ অপরাহ্ন
অনেক সচেতন মানুষের মনে একটি প্রশ্ন বার বার উঁকি দিচ্ছে : একজন ৭৫ কিংবা ৮৩ বছরের বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার বাকী জীবন সুখে সাচ্ছন্দ্যে থাকতে কতো ডলার বা টাকার প্রয়োজন? এ জন্য কি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বা টাকা দরকার? এদেশের অনেক সহজ সরল মানুষকে এখন প্রায়ই এই প্রশ্নটি করতে দেখা যাচ্ছে। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রসঙ্গে এমন প্রশ্ন করছেন তারা। দুর্নীতির ক্ষেত্রে বিশ^ ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এই দুই ব্যক্তি প্রসঙ্গে এমন প্রশ্ন জাগা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সম্প্রতি ‘গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশন’ নামে একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প থেকে ৫ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেন শেখ হাসিনা।’
এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে তাকে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাট্রম। এ কাজে মধ্যস্থতা করেন শেখ হাসিনার বোনঝি ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় ১ হাজার ২৬৩ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার এক ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাট্রম। নিজের বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য্ ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী হয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতা ও করেন টিউলিপ। ২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানী চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও ‘জুমানা ইনভেস্ট’ নামে একটি কোম্পানী রয়েছে তাদের। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, এই কোম্পানীর মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অকশের অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা।
এটা হলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হাজারো দুর্নীতির অভিযোগের একটি। অপরদিকে সালমান এফ রহমান ছিলেন শেখ হাসিনার ‘দেওয়ান’ বা ‘কোষাগার রক্ষক’ অর্থের প্রধান যোগানদাতা। সালমান নিজে কতো টাকা আত্মসাত করেছেন, এর কোন ইয়ত্তা নেই। শুধু শেয়ার বাজার ও ব্যাংক খাত থেকেই তিনি লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য, শেখ হাসিনার বয়স প্রায় ৭৭ বছর। আর সালমান এফ রহমানের বয়স প্রায় ৭৬ বছর। এ অবস্থায় অনেকের প্রশ্ন, এই দুই বয়োবৃদ্ধ নারী ও পুরুষ এদেশের গড় আয়ূর ভিত্তিতে হিসাব করলে তাদের আয়ূ সীমার শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন। সেই হিসেবে বড়ো জোর আর ৮ বা ১০ বছর বাঁচার কথা তাদের। কারণ ৮৫ বা ৯০ বছরের বেশি বেঁচে থাকার রেকর্ড এদেশে খুব কমই আছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বাস্তবতা যদি এমন হয়, তবে এই দুই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার অর্থের প্রতি এতো প্রচ- লোভ কোনো? ৮/১০ বছর সুখে সাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকার জন্য একজন ৭৫ বা ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধ নারী বা পুরুষের তো বিলিয়ন ডলার বা টাকার প্রয়োজন নেই। অথচ তারা দু’জন এই বয়সে পাগলের মতো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আত্মসাত করেছেন, পাচার করেছেন, জমিয়েছেন! এসব লক্ষ্য করে অনেকে শেখ হাসিনা ও সালমানকে অর্থোন্মাদ বা মানি সাইকোপ্যাস বলে আখ্যায়িত করেছেন, টাকা আত্মসাত বা সংগ্রহ যাদের ভয়ংকর নেশায় পরিণত হয়েছিলো। তাই বর্তমানে এই দুই সাইকোপ্যাসের হাত থেকে দেশ রেহাই পাওয়ায় অনেকে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করেছেন। সরকারে প্রতি দাবি জানাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য। এর পাশাপাশি তাদের পাচারকৃত বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ফেরত আনার জন্য।