ধাউড় শ্রেণীর মিডিয়া!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০:৪৭ অপরাহ্ন
অতীতে সিলেট শহরের বাসিন্দারা অতি নির্লজ্জ প্রকৃতির নারী কিংবা পুরুষকে ‘কাষ্টঘরের ধাউড়দের’ সাথে তুলনা করতেন। অবশ্য বর্তমানে এই স্থানের পরিবেশ অনেক বদলে গেছে। এখন আর সেই তুলনা চলে না। অতীতে অর্থাৎ ২/৩ যুগ আগে গরীর এই বিশেষ এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কথাবার্তা ও আচরণ ছিলো সভ্যভব্য মানুষের চেয়ে আলাদা। তারা রেগে গেলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালির পাশাপাশি কাপড়-চোপড় খুলে ফেলতো অনেক সময়। বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু পত্র-পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষভাবে ভিডিও চ্যানেলের কর্মকান্ড দেখে কাষ্টঘরের ঐ বিশেষ পেশাজীবীদের নির্লজ্জ আচরণের কথা যে কারো মনে জাগতে পারে।
ভারতের এসব পত্র-পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল বাংলাদেশ নিয়ে এমন জলজ্যান্ত মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে যে, তাদের মাঝে কোন লজ্জাশরম আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না সাধারণ দর্শকদের মাঝে। মার্কিন নির্বাচনে যদি বাইডেনের প্রার্থী জিততেন, ট্রাম্প হারতেন এবং বাংলাদেশের কোন মিডিয়া এই বলে প্রচার করতো যে, বাইডেনের ভয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত ছেড়ে পালিয়েছেন, তবে ভারত ও বিশে^র অন্যান্য দেশের দর্শক ও পাঠকের মাঝে এ ধরণের সংবাদের কী প্রতিক্রিয়া হতো? নিশ্চয়ই এমন সংবাদ প্রচার করা অর্থাৎ মিথ্যাচারকারী মিডিয়াকে অনেকেই গালমন্দ ও ভৎর্সনা করতেন। অনেকে এসব চ্যানেল বর্জন করতেন। কিন্তু শুনলে অনেকে অবাক হবেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে এমনি ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন ও নোংরা সংবাদ পরিবেশন করেছে পশ্চিমবঙ্গের কিছু মিডিয়া। এগুলোর মধ্যে ‘রিপাবলিক বাংলা নামক মেইড ইন কাষ্টঘর মার্কা একটি টিভি চ্যানেল সবচেয়ে এগিয়ে। তারা প্রচার করেছে, নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস পালিয়েছেন, তিনি আর বিদেশ থেকে দেশে ফিরছেন না।
বিভিন্ন দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়া সবসময় যে শতভাগ সংবাদ প্রচার করে এমন নয়। অনেক সময় ভুলবশত কিংবা নীতিগত কারণে অসত্য ও ত্রুটিপূর্ণ সংবাদ প্রচার করতে থাকে। এতে সাংবাদিকতার ইথিক্স বা নৈতিকতা যেমন লঙ্ঘিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তেমনি তাদের দর্শক ও পাঠক প্রিয়তাও হ্রাস পায়। তাই পারতপক্ষে কোন মিডিয়াই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহনি সংবাদ প্রচার করে না। কিন্তু রিপাবলিক বাংলাসহ পশ্চিমবঙ্গের এই টিভি চ্যানেলগুলোকে সাংবাদিকতার এসব নীতি নৈতিকতার কোন ধার ধারতে বা এগুলোর প্রতি ন্যুনতম সম্মান দেখাতে দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী জনগন ও সরকারের প্রতি রাজনৈতিক হিংসা ও বিদ্বেষ থেকে তারা যে নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও ভিত্তিহীন বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে, তা ঐ কাষ্টঘরের ধাউড় গোষ্ঠীর অতীত আচরণের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, যা কোন সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।